অলোকা
হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে গোলাপ। আবার খাড়া পাতাসহ ডগা দূর থেকে অনেকটা টিউলিপের মতো দেখায়। রঙেরও ছড়াছড়ি। প্রায় ৪৫টি রঙের এ ফুলটি গাছ থেকে তোলার পর ১৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। ফুলটির জাপানি নাম তরুকোগিকিও। আমাদের দেশে ইউস্টোমা নামেই বেশি পরিচিত। কেউ কেউ বলেন লিসিয়েন্থাস। নন্দিনী নামেও পরিচিত। তবে অতিসম্প্রতি আমাদের দেশে ফুলটি অলোকা নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক নাম Eustoma grandifloram.
জেনেটিনসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বর্ষজীবী গুল্মজাতীয় এ ফুলটি বুনো বৈশিষ্ট্যের। ঝড়, বৃষ্টি, প্রচণ্ড গরম বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এটি অক্ষত থাকে। এটি মূল কান্ড এবং পাতায় বিভক্ত, পাতার রঙ নিলাভ সবুজ রঙের। গাছটি লম্বায় ২০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উচুঁ হয়। প্রতিটি ফুল শক্ত ডাঁটা বা বৃন্তের ওপর থাকে বলে কখনো বেঁকে যায় না বা নুয়ে পড়ে না।
কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বেশ কদর থাকলেও দাম চড়া। তাই ফুলটি কয়েকটি দূতাবাস আর নামীদামি হোটেলেই বেশি দেখা যায়। কেউ কেউ শখ করে ঘরেও রাখেন। একটানা ১৫ দিন পর্যন্ত ফুলটি অবিকল থাকে বলে দাম এত বেশি। ফুলদানির পানিতে চিনি মিশিয়ে ২৫ দিন পর্যন্ত তাজা রাখা যায়। একটি গাছে একাধিক ফুল ফোটে। কলিগুলো ধারাবাহিক ভাবে ফোটে বলে গাছটি ফুলশূন্য হয় না। একেকটি গাছ একাধিক মৌসুমে ফুল দিতে পারে। প্রতি মৌসুমে একটি গাছ থেকে অন্তত ১২০টি ফুল পাওয়া যেতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফুলের সঙ্গে চলে আসা কলিগুলো ঘরের স্বাভাবিক পরিবেশে ফুলদানিতেই কয়েক দিন পর সম্পূর্ণ ফোটে।
সাধারণত জুন-জুলাই মাসে ফুলটি ফুটলেও সারা বছরই উৎপাদন সম্ভব। অধিক ফলন, রোগমুক্ত চারা, একসঙ্গে একই বয়সের অনেক চারা পাওয়া ও ফুলের গুণগত বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখার জন্য টিস্যু কালচার অপরিহার্য। তাছাড়া এই জাতের ফুলের বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা কঠিন এবং বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতাও কম। সাধারণত বেলে দোআঁশ এবং জৈব পদার্থযুক্ত মাটি এই ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত। চারা লাগানোর নব্বই দিনের মধ্যে ফুল পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত বলা যায় যশোরের গদখালীতে ফুলটির বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে।
তথ্য কৃতজ্ঞতা : পুষ্পকথন
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন