লাল শাক ভাজি, বা ছোট কোন মাছ দিয়ে লাল শাকের ঝোল খেতে কে না ভালোবাসে। যারা এখনো লাল শাক খান নি তারা খাওয়ার আগে একবার জেনেই নিন এর বাহারি স্বাস্থ্যগুন সম্পর্কে তাহলে অবশ্যই দেহের সুস্থতার দিক চিন্তা করে লাল শাক খাবেন।
দেহের রক্তশূন্যতা রোধ করে
দেহের রক্তশূন্যতা রোধ করতে লাল শাক খুব উপকারী কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। লাল শাক দিয়ে আপনি জুস বানিয়েও খেতে পারেন। কিছু সাধারণ উপাদান যেমন- ডিম, মধু, লেবুর রস ও লাল শাক একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন তারপর এরপর ব্লেন্ড করে সামান্য পানি মিশিয়ে খেয়ে নিন। ভালো ফলাফল পেতে প্রতিদিন একবার খাওয়া উচিৎ।
কিডনি সমস্যা দূর করতে
কিডনি ফাংশনগুলো ভালো রাখতে ও কিডনি পরিষ্কার রাখতে লাল শাক খুব ভালো। এছাড়াও যেসকল নারীরা মাত্রই সন্তান জন্ম দিয়েছেন তাঁদের জন্য লাল শাক খুব কার্যকরী।
ভালো দৃষ্টি শক্তি
লাল শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুব উপকারী। তাই দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে ডায়েট মেন্যুতে রাখুন লাল শাক।
চুলের গোড়া মজবুত করে
চুলের স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাক ভালো। লাল শাক ও লবণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন, তারপর ছেকে রস সংরক্ষন করুন রসটি চুলের গোঁড়ায় তেলের মতো করে দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই জুসটি পুরো সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করতে পারেবন চুলে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলে মিনারেল ও পুষ্টি যোগায়।
জ্বর সারিয়ে তোলে
দেহের সুস্থতায় লাল শাক যে ভালো তা আমরা জানি। কিন্তু জ্বর সারাতেও লাল শাকের উপকারিতা অনেক বেশি। জ্বরের সময় লাল শাক ভাজি প্রতিদিন খান দেখবেন জ্বর ধীরে ধীরে কমে যাবে।
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।
এতে আছে এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমার কারণে যে অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে লাল শাক তা প্রতিরোধ করে।
লাল শাকে আছে বিটা-ক্যারোটিন। যেটি আপনার হার্টস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিকে অনেকাংশে কমিয়ে আনবে। আর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে লাল শাকের জুড়ি নেই।
যাদের দাঁতে সমস্যা আছে তারা বেশি করে লাল শাক খাওয়া প্রয়োজন। কারণ এতে আছে ভিটামিন 'সি'। আর লাল শাক দাঁত ও দাঁতের অস্থি গঠনে দারুণভাবে সাহায্য করে। দাঁতের মাড়ি ফোলা দূর করে।
যেহেতু আঁশ জাতীয় অংশ খাবার তাই নিশ্চিতভাবেই খাবার পরিপাকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও লাল শাক অনেক উপকারী। কারণ এতে ক্যালরি নেই বললেই চলে। আর ক্যালরি না থাকায় ওজন বাড়ারও ভয় নেই লাল শাকে।
সুতরাং এই শীতে লাল শাকই হোক আপনার প্রতিদিনের খাদ্য।
লাল শাক চাষ
লাল শাক চাষ কনটেন্টটিতে লাল শাক চাষ কিভাবে করা যায়,চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা, এক বিঘা জমির উৎপাদন খরচ,এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
লাল শাক চাষ
আমাদের দেশে লাল শাক একটি জনপ্রিয় শাক। এর ইংরেজি নাম Red amaramth ও বৈজ্ঞানিক নাম Anaranthus oleraceus. বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কম বেশি লাল শাকের চাষ হয়। রান্নার পর শাকের রং গাঢ় লাল রঙ হয়। লাল শাক একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লাল শাক চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। একজন বেকার নারী বা পুরুষ নিজের কর্মসংস্থান ব্যবস্থার জন্য নিজের জমিতে অথবা বর্গা নেওয়া জমিতে লাল শাক চাষ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পুষ্টিগুণ
১. আমাদের দেশে বারি লালশাক-১ জাতের শাক চাষ ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।
* চাষের উপযোগী পরিবেশ ও মাটি
সারাবছরই লালশাক চাষ করা যায়। তবে শীতের শুরুতে লাল শাকের ফলন বেশি হয়। প্রায় সব ধরণের মাটিতেই সারাবছর বারি লাল শাক-১ এর চাষ করা হয়। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি লাল শাক চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো।
সার প্রয়োগ
বীজ ১ কেজি ২০০
জমি তৈরি ------- ৯০০
পানি সেচ ------- সাধারণত প্রয়োজন হয় না
শ্রমিক ৫জন (প্রতিজন=২০০ টাকা) ১০০০
সার প্রয়োজন আনুসারে জৈব সার নিজস্ব
বিকল্প হিসেবে
টিএসপি=৫ কেজি (১ কেজি=২৩ টাকা)
ইউরিয়া=২৩ কেজি (১ কেজি=১৫ টাকা)
এমপি=৬ কেজি (১ কেজি=২৮ টাকা)
জিপসাম=৩ কেজি (১ কেজি ১২ টাকা) ৬৬৪
কীটনাশক প্রয়োজন অনুসারে জৈব বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার নিজস্ব/দোকান
জমি ভাড়া একবছর ৪০০০
মাটির জৈব গুণাগুণ রক্ষা ও উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ বাড়তে পারে।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, ঘিওর, মানিকগঞ্জ, অক্টোবর ২০০৯
উত্তর : সারাবছরই লাল শাক চাষ করা যায়। তবে শীতের শুরুতে লাল শাকের ফলন বেশি হয়।
উত্তর : প্রায় সব ধরণের মাটিতেই সারাবছর বারি লালশাক-১ এর চাষ হয়। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি লাল শাক চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো।
উত্তর : লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
২৮-১১-২০১৩ | দেখা হেয়েছ: ২৫৮০ বার |