রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯
Home »
» গর্ভাবস্থায় পানি ভাঙা ও করণীয়
গর্ভাবস্থায় পানি ভাঙা ও করণীয়
সাধারণত অ্যামনিওটিক মেমব্রেন রাপচার বা পানি ভাঙার ঘটনা হয় লেবার পেইন ওঠার পর। কোনো কারণে যদি এর আগেই মেমব্রেন রাপচার হয়ে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড বা গর্ভস্থ পানি বের হয়ে যায়, তবে তাকে প্রিম্যাচিওর রাপচার অব মেমব্রেন বলে। এটি গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা, যা নিয়ে অনেকে শঙ্কিত থাকেন।
ভুলগুলো
গর্ভাবস্থায় কানো কারণে মাসিকের রাস্তা দিয়ে যদি অতিরিক্ত পানি বের হয়, তবে বেশির ভাগ গর্ভবতী নারী ধরে নেন, এটা বাচ্চার পানি—অর্থাৎ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ রকম ধারণা ভুল হতে পারে। অনেক সময় অনেক কারণেই এমন হতে পারে। তা ছাড়া ইউরিন বা প্রস্রাব বের হলেও তা অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মতোই মনে হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ভ্যাজাইনাল সিক্রেশন অনেক বেড়ে যায়। ফলে মাঝেমধ্যে এই নরমাল সিক্রেশনকেও অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ভেবে অনেকে ভুল করে থাকেন।
পরীক্ষা
এ সময় ভালোভাবে রোগীর ইতিহাস নিলেই কিছুটা আইডিয়া করা যায় যে আসলেই মেমব্রেন রাপচার হয়েছে কি না। এটা হলে সাধারণত একসঙ্গে অনেক পানি বের হবে এবং পেটিকোট বা পরনের কাপড় ভিজে যাবে। এ ছাড়া স্পেকুলাম এক্সামিনেশনের মাধ্যমে জরায়ুর মুখ সরাসরি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে জানা যাবে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কতটা আছে। মেমব্রেন রাপচার হয়েছে কি না এ সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য মিলবে না।
ফলাফল
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এমনটি হয়ে থাকলে একে সাধারণত অ্যাবরশন হিসেবেই ধরা হয়। আর যদি বাচ্চা ম্যাচিওর হতে কিছুদিন বাকি থাকে, তবে রোগীকে হাসপাতালে বেড রেস্টে রেখে বাচ্চার ম্যাচিওরিটি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আর এর মধ্যেই লেবার পেইন বা ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে সেই গর্ভাবস্থা আর নিয়মিত করা সম্ভব হয় না। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে পানি ভাঙলে মাকে ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে লেবার পেইন উঠে যায়। যদি পেইন না থাকে, তবে ইন্ডাকশন (ওষুধের মাধ্যমে লেবার পেইন শুরু) করাও সম্ভব।
সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড রাপচার বা পানি ভাঙা একটি জরুরি সমস্যা। কারণ এই মেমব্রেন গর্ভস্থ বাচ্চাকে বাইরের জীবাণু থেকে রক্ষা করে। তাই মেমব্রেন রাপচার হলে রোগীকে জীবাণুমুক্ত প্যাড ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়, অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা হয়। একই সঙ্গে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এবং প্রস্রাব পরীক্ষা করে দেখা হয় কোনো ইনফেকশনের লক্ষণ আছে কি না। কারণ বিভিন্ন ইনফেকশনের কারণেও মেমব্রেন রাপচার হতে পারে।
তাই পানি ভাঙার লক্ষণ দেখা দিলেই গর্ভবতী নারীদের উচিত অনতিবিলম্বে নিকটস্থ চিকিৎসককে অবহিত করা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন