রুটিন প্রস্রাব পরীক্ষায় আমিষ বা প্রোটিনের উপস্থিতি দেখলে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। প্রস্রাবের সঙ্গে আমিষ বা প্রোটিন (কখনো বলা হয় এলবুমিন) নিঃসরণ স্বাভাবিক কিছু নয়। এটি কিডনি সমস্যার প্রাথমিক উপসর্গ। যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের মাঝে মাঝে প্রস্রাবের আমিষ পরীক্ষা করা উচিত। কেননা এতে কিডনির অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
প্রস্রাবে আমিষ কেন যায়
আমাদের রক্তে যে আমিষ আছে, তা সাধারণত কিডনির ছাঁকনি গলে প্রস্রাবের সঙ্গে যেতে পারে না। দৈনিক ৩০ মিলিগ্রামের বেশি এলবুমিন যাওয়াটা অস্বাভাবিক। ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি এলবুমিন নিঃসরণ উদ্বেগজনক। প্রস্রাবে আমিষ নিঃসরণের অন্যতম কারণ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। এ ছাড়া কিডনির প্রদাহ, সংক্রমণ, এসএলই বা লুপাস, অ্যামাইলয়েডোসিস, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রস্রাবে আমিষ যেতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে প্রস্রাবে আমিষ গেলে প্রি–একলাম্পশিয়ার মতো বিপদ ঘটতে পারে।
কখনো কখনো জ্বর, অত্যধিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম কিংবা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রস্রাবে সামান্য আমিষ যেতে পারে। কিন্তু ক্রমাগত আমিষ গেলে, বিশেষ করে তিন মাসের বেশি সময় এমনটা হলে তা ক্রনিক কিডনি রোগই নির্দেশ করে।
কীভাবে বুঝবেন
রুটিন প্রস্রাব পরীক্ষা করা ছাড়া এ সমস্যা শনাক্ত করা মুশকিল। তাই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ৬ মাস বা এক বছর অন্তর প্রস্রাবে আমিষ পরীক্ষা করা উচিত। আমিষ নিঃসরণের হার বেশি হলে শরীর ফুলে যায় ও দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মুখে ও পায়ে পানি আসে। প্রস্রাব ঘোলাটে বা সাদাটে হতে পারে।
কী করবেন
প্রস্রাব পরীক্ষায় আমিষ ধরা পড়লে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টায় নিঃসৃত আমিষের পরিমাণ নির্ণয় করে জটিলতার মাত্রা বোঝার চেষ্টা করবেন। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা নির্ণয় করতে হবে। কিডনির কার্যকারিতার মাত্রা বোঝার জন্য জিএফআর দেখতে হয়। এসিই ইনহিবিটর বা এআরবি গোত্রের ওষুধ ব্যবহার করলে এলবুমিন নিঃসরণ কিছুটা কমে। প্রস্রাবে এলবুমিন নিঃসরণ কেবল কিডনি রোগের সতর্কসংকেতই নয়, এটি আশু হৃদ্রোগেরও সতর্কসংকেত। তাই হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখার দিকেও নজর দিতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন