সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
অশ্বগন্ধার উপকারিতা
অশ্বগন্ধা হচ্ছে উইথানিয়া গণের একটি গুল্ম । প্রাচীন কালে এই অশ্বগন্ধার প্রয়োগ হতো যেখানে রসবহ, রক্তবহ ও শুক্রবহ স্রোতের দোষ রয়েছে, এসসব দোষ নিরসন করে তাকে স্বাভাবিক ক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। অশ্বগন্ধার ১২টি প্রমাণিত উপকারিতা নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
১) শিশুকালের কার্শ্য রোগ:- যাকে Emaciation বলে। এর কারণ হলো তার পুষ্টি, যেটা তার রসবহ স্রোত অথবা রক্তবহ স্রোতের স্বাভাবিক ক্রিয়াশীলতার অভাবেই হয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ওষুধ খেয়ে আর পুষ্টিকর খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ভাল হয় ঠিকই, কিন্তু একটি জায়গায় সমস্যা থেকেই যায় তাহলো শক্তিবহ স্রোতের হীনবলত্ব তো থেকে যায়। যখনই সে বিবাহিত হলো তখনই তার ঐ হীনশুক্রর জন্য খুবই অসুবিধ হতে থাকবে; সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ দেড় গ্রাম মাত্রায় প্রতিদিন সকালে ও বিকালে আধা কাপ গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ শুক্রের অপুষ্টি সমস্যা চলে যাবে।
২) শ্রমে ক্লান্তি দূর করতে:- শরীরে তেমন কোনো রোগ নেই, হজমও হয়, দাস্ত পরিষ্কার হয়; শরীর যে খারাপ থাকে তাও নয়, অথচ তারা একটু পরিশ্রম করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে; তখনই ধরে নিতে হবে তার রক্তবহ স্রোতে দূর্বলতা এসেছে, অর্থাত্ অল্পেই তার হদযন্ত্রকে অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে; এক্ষেত্রে অনেকের দেখা যায় ধমনীর স্পন্দন দ্রুত হচ্ছে অর্থাত্ যেটা হলো চিরাচরিত প্রচলিত নাড়ী স্পন্দন। এই যে হৃদযন্ত্রের অত্যধিক চালনা হচ্ছে, এর জন্যেই সে ক্লান্তি অনুভব করছে, তাই এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ দেড় গ্রাম মাত্রা করে দু বেলা আধ বা এক কাপ গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। কয়েকদিন খাওয়ার পর ঐ মাত্রাটা আস্তে আস্তে বাড়িয়ে ৪ থেকে ৫ গ্রাম করে প্রতি বেলায় খেতে পারবেন। এইভাবে শুরু থেকে মাস দেড়েক খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ ক্লান্তি আর থাকবে না।
৩) শ্বাসে ও কাসে:- যদি এদের শৈশবের ইতিহাসে শোনা যায় তাহলে বুঝা যাবে এরা ছোটবেলায় খুব ডিগডিগে চেহারার ছিলেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। বটে, কিন্তু একটা সমস্যা তাঁদের শরীরে থেকে যায়নি, সেটা হচ্ছে অল্প ঠান্ডা লাগলে অথবা কোনো ঋতু পরিবর্তনের সময় তাঁদের সর্দি কাসি হবেই, তখনই বুঝতে হবে। শৈশবের অপুষ্টিই এই বিপাকে ফেলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ এক গ্রাম থেকে ২ গ্রাম মাত্রায় সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প গরম জল সহ খেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে এটা প্রত্যক্ষভাবে শ্বাস-কাসের ওষুধ নয়; যাঁর পূর্ব ইতিহাস এই ধরনের ছিল, তাঁর ক্ষেত্রেই কাজ করবে।
৪) ফোড়ায়:- অনেকে এটাতে ভুগে থাকেন। অনেকে বলে থাকেন যে, রক্ত খারাপ হয়েছে, কিন্তু জেনে রাখা ভালো রক্ত দূষিত হলে আরও কঠিন রোগ আসে, যেমন কুষ্ঠ ও বাতরক্ত। কোনো কারণে রক্তবিকৃত হয়ে এই ফোড়া হয়, যদি এই বিকারকে সরিয়ে ফেলা যায় তাহলে ফোড়া আর হবে না, সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক থেকে দেড় গ্রাম মাত্রায় আধ কাপ গরম দুধের সঙ্গে সকালে ও বিকালে দুবার খেলে ঐ রক্তবিকারটা চলে যাবে, আর ফোড়াও হবে না। তবে প্রারম্ভিক মাত্রা কিন্তু এক গ্রামের বা ৭ থেকে ৮ রতির বেশি নয়।
৫) শ্বেতী রোগে:- এই শ্বেতী কতো গভীরে প্রবেশ করেছে সেটা বোঝার উপায় হলো দাগগুলি দুধের মতো সাদা হয়ে গেলে বুঝতে হবে যে, এ রোগাক্রমণ মাংসবহ স্রোত পর্যন্ত হয়েছে; আর দাগগুলি একটু লালচে হলে বুঝতে হবে, এটা রক্তবহ স্রোতের এলাকায় আছে; আর যখন আবছা সাদা দাগ দেখা যাবে তখন বুঝতে হবে, এখন সে রসবহ স্রোতের এলাকায় আছে; আর অশ্বগন্ধার মূল তখনই কাজ করে যখন এই রোগ রসবহ ও রক্তবহ স্রোতের এলাকায় থাকে; এ অবস্থার ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ দেড় বা দুই গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে দুবেলা দুধসহ খেতে হবে। আর কাঁচা অশ্বগন্ধার গাছের পাতা ও মূল একসঙ্গে ১০ গ্রাম নিয়ে একটু থেঁতো করে, ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে সিকি কাপ বা তারও কম থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ জলটা সমস্ত দিনে ৩ থেকে ৪ বার দাগগুলিতে লাগিয়ে দিতে হবে। তবে ২ থেকে ৪ দিন খেয়ে বা লাগালে সেরে যাবে। যদি না সারে তাহলে এটা ছেড়ে দিলে চলবে না; কমপক্ষে ৩ মাস ব্যবহার করতে হবে। তবে এটা ঠিক, যে দাগ সাদা দুধের মতো হয়ে গিয়েছে আর ৩ বত্সর হয়ে গিয়েছে, সেটা সেরে যাওয়া অর্থাত্ দাগ মিলিয়ে যাওয়া নিতান্তই দুরূহ ব্যাপার।
৬) পায়ের ফুলোয়:- প্রায়ই আমাশা হয়। আর এটা সেটা খেয়ে সাময়িক চাপা দেওয়া হচ্ছে, এর ফলে কিছুদিন বাদে আমরসের ফুলো পায়ে দেখা দিয়েছে, বুঝতে হবে এ আমরস রসবহ স্রোতকে দূষিত করেছে, এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ ১ গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে থানকুনি (Centella asiatica) পাতার রস ৪ চা চামচ একটু গরম করে সেই জলীয়াংশটার সঙ্গে খেতে হবে; অথবা শ্বেত পুনর্নবার (Trianthema portulacastrum) রসও নেওয়া চলে। এই মুষ্টিযোগটি ব্যবহার করলে পায়ের ফুলোটা সেরে যাবে।
৭) ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে:- এটার আয়ুর্বেদিক নাম তমক শ্বাস। এই রোগের উপসর্গ হলো রোগী কেসেই চলেছেন কিন্তু সর্দি ওঠার নামগন্ধ নেই। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় নিয়ে গাওয়া ঘি এক চা চামচ ও মধু আধ চা চামচ মিশিয়ে সকালের দিকে একবার ও বিকালের দিকে একবার একটু একটু করে চেটে খেতে হবে।
৯) কার্শ্য রোগ:- এ রোগটা শিশুদেরই বেশি দেখা যায়। এই রোগের কারণ হলো প্রথমে রসবহ স্রোত দূষিত হয়, ফলে যেটি সে খায়, সেটা থেকে তার পোষণ হয় না; তার পরিণতিতে রক্তমাংসও আর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না। অনেকের ধারণা, বাইরে থেকে কোনো স্নেহজাতীয় পদার্থ মালিশ করলে ওটার পুষ্টি হবে, আভ্যন্তরিক কোনো কিছু খাওয়ানোর প্রয়োজন নাই; এর ফলে আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে, অর্থাত্ অস্থিক্ষয় হতে থাকে। এক্ষেত্রে তাকে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ আধ গ্রাম মাত্রায় দুইবার গরম দুধ ও চিনিসহ খেতে দিতে হয়। পরে শরীরে গঠন আরম্ভ হলে এটা এক গ্রাম পর্যন্তও দেওয়া যায়, কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ মাস খাওয়াতে হয়।
১০) বুক ঘড়ফড়ানিতে:- হৃদযন্ত্রের কোনো দোষ যন্ত্রে ধরা পড়ে না, পিপাসা বেশি, পেটে বায়ু, একটু আধটু যে হয় না তা নয়, তবে এটা তো অনেকেরই হয় ; সেটা কিন্তু ঠিক কারণ নয়; আসলে রক্তবহ স্রোতের বিকার চলছে, তাই এটি অসুবিধা। এই ধরনের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক গ্রাম থেকে দেড় গ্রাম মাত্রায় দুই বেলা দুধসহ কয়েকদিন খেলে ওটা সেরে যাবে।
বাহ্য প্রয়োগ:-
১১) শিশুদের দুধে শ্বাসে:- অশ্বগন্ধা মূলের ক্বাথ করে, তেল মিশিয়ে বুকে পিঠে মালিশ করলে ওটা সেরে যাবে। মাত্রা নিতে হবে ৫ গ্রাম অশ্বগন্ধা মূল একটু থেঁতো করে এক কাপ জলে সিদ্ধ করে, ৩ থেকে ৪ চামচ থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে ঐ ক্বাথটা ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম সরষের তেলের সঙ্গে মিশাতে হবে।
১২) ফোড়ায়:- এ ফোড়া না পাকা না কাঁচা যাকে বলে দরকচা মেরে আছে, সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল বেটে একটু, গরম করে ফোড়ার উপর সকালে বিকালে ২ বার করে লাগালে ওটা পেকে ফেটে যাবে।
সতর্কীকরণ- ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র-১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি' খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১৬২-১৬৬
মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
ভাত খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ইদানীং দেখা যাচ্ছে, অনেকে ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকা থেকে ভাত, দুধ, ডিম ইত্যাদি খাবার বাদ দিয়ে দিচ্ছেন; বিশেষ করে টিনএজ বা অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা। ভাতের পরিবর্তে তারা জাংক বা ফাস্ট ফুডের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা ভাতের তুলনায় আরও বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার।
ক্যালরির হিসেবে যদি আমরা দেখি, তাহলে দেখা যাবে, ১ কাপ ভাত থেকে ১৫০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ১ কাপ পোলাও থেকে ৩০০ এবং ১ কাপ বিরিয়ানি থেকে ৫০০ ক্যালরি পাওয়া যায়। একইভাবে রুটির পরিবর্তে পরোটা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, লুচি-পুরি, শর্মা ইত্যাদি বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ওজন বাড়ার পেছনে মূলত পরিমাণে বেশি খাবার খাওয়া, বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং ক্যালরি খরচ না করা অর্থাৎ শারীরিক পরিশ্রম না করা দায়ী। প্রতিদিন যদি কেউ ১০০ ক্যালরি বেশি খাবার খায়, তাহলে তাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দ্রুত হাঁটতে হবে। এতে শরীরে ক্যালরি জমার ঝুঁকি কম থাকবে। নইলে বছর শেষে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ওজন বাড়ার পেছনে মূলত পরিমাণে বেশি খাবার খাওয়া, বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং ক্যালরি খরচ না করা অর্থাৎ শারীরিক পরিশ্রম না করা দায়ী। প্রতিদিন যদি কেউ ১০০ ক্যালরি বেশি খাবার খায়, তাহলে তাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দ্রুত হাঁটতে হবে। এতে শরীরে ক্যালরি জমার ঝুঁকি কম থাকবে। নইলে বছর শেষে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
অনেকেই বলতে পারেন, স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভাত বাদ দিলে ক্ষতি কী? ক্ষতি আছে। নিয়ম হলো, শরীরের শক্তি–চাহিদার অর্ধেক আসতে হবে শর্করাজাতীয় খাবার থেকে। আর আমাদের দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের স্বাভাবিক বা সহজ শর্করার উৎস ভাত। শর্করা না খেয়ে আপনি প্রোটিন বা অন্যান্য যে খাবারই খান না কেন, তা সঠিকভাবে শরীরে কাজ করবে না। যদি স্নেহজাতীয় বা সোজা কথায় তেলজাতীয় খাবার খান, তাহলে লিভার, রক্ত ও শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়তে থাকবে। শর্করাজাতীয় খাবার না খেলে আপনার শরীরের ওজন সাময়িকভাবে কিছু কমবে ঠিকই, কিন্তু পাশাপাশি শারীরিক দুর্বলতা, কাজের ক্ষমতা কমে যাওয়া, আলস্য ও ঘুম ঘুম ভাব বাড়তে থাকবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে আপনার শরীরের জন্য খারাপ ফল বয়ে আনবে। সে কারণে ওজন কমানোর জন্য ভাত খাওয়া বাদ দেওয়াটা কোনো ফল বয়ে আনবে না।
পরিমাণমতো পারিবারিক খাবার খেয়েও আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন বা কমাতেও পারেন। সকালে রুটি বা মুড়ি, সঙ্গে ডিম, সবজি ইত্যাদি খান। দুপুরে ভাত, সঙ্গে শাকসবজি, মাছ, ডাল বা এ রকম স্বাভাবিক খাবার খান। রাতে রুটি বা ভাত খান পরিমাণমতো। সঙ্গে যেকোনো শাকসবজি, মাছ, ডাল, লেবু, সালাদ ইত্যাদি খান। বয়স, পরিশ্রম করার ধরন এবং শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে খাবারের পরিমাণ। তবে সারা দিনের খাবারকে তিন বেলায় না খেয়ে একই খাবার আপনি ৬ ভাগে ভাগ করে খেতে পারেন। বেশি খেয়ে ফেললে শারীরিক পরিশ্রম করুন।
পরিমাণমতো পারিবারিক খাবার খেয়েও আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন বা কমাতেও পারেন। সকালে রুটি বা মুড়ি, সঙ্গে ডিম, সবজি ইত্যাদি খান। দুপুরে ভাত, সঙ্গে শাকসবজি, মাছ, ডাল বা এ রকম স্বাভাবিক খাবার খান। রাতে রুটি বা ভাত খান পরিমাণমতো। সঙ্গে যেকোনো শাকসবজি, মাছ, ডাল, লেবু, সালাদ ইত্যাদি খান। বয়স, পরিশ্রম করার ধরন এবং শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে খাবারের পরিমাণ। তবে সারা দিনের খাবারকে তিন বেলায় না খেয়ে একই খাবার আপনি ৬ ভাগে ভাগ করে খেতে পারেন। বেশি খেয়ে ফেললে শারীরিক পরিশ্রম করুন।
বাংলাদেশের প্রধান খাবার ভাত। ‘ডাল-ভাত’ খাওয়া বাঙালির অভ্যাস। ডাল-ভাতের সঙ্গে বিভিন্ন সবজি, মাছ খাচ্ছি আমরা শত শত বছর ধরে। এটি আমাদের সঙ্গে মানিয়ে গেছে সুন্দরভাবে। কাজেই পারিবারিক এসব খাবার নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। শুধু পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। আর পরিমিত খাবার খান।
বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯
ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে আপনার কি করনীয়
১. লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার লেবু খণ্ড করে কেটে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢুকাবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনি চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।
২. নিমের তেলের ব্যবহার
নিমের মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে। নিমের তেল ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। তাই একসাথে দুটি উপকার পেতে ব্যবহার করতে পারেন নিমের তেল। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না এবং সেই সাথে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে।
৩. পুদিনার ব্যবহার ছোট গ্লাসে একটু পানি নিয়ে তাতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা রেখে দিন খাবার টেবিলে। ৩ দিন অন্তর পানি বদলে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।
৪. টবে লেমন গ্রাস লাগান থাই লেমন গ্রাসে আছে ‘সাইট্রোনেলা অয়েল’ যা থেকে বের হয় একধরনের শক্তিশালী সুগন্ধ। এই সুগন্ধ কিন্তু মশাদের যম। মশারা এর কাছেও ঘেঁষে না। ফলে আপনার আশেপাশে লেমন গ্রাসের ঝাঁড় থাকলে মশারা আপনাকে খুঁজে পাবে না। আর লেমন গ্রাস দেখতেও কিন্তু মন্দ নয়। এমনসব স্থানে এসব গাছের টব রাখুন যেখানে সকাল বিকাল কিংবা রাতে পরিবারের অন্যদের নিয়ে কিংবা বন্ধু বান্ধব নিয়ে আড্ডা বা সময় কাটান। এভাবে থাকুন মশা মুক্ত।
৫. ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯
হাপানী বা ব্রংকিয়াল এস্থমা
হাপানী বা ব্রংকিয়াল এস্থমা কি?
ইহা এক ধরনের শারীরিক অসুস্থতা যার বৈশিষ্ট্য হলো
শ্বাসপথের কোষকলায় দীর্ঘ সময় স্থায়ী প্রদাহ ও
শ্বাসনালীর বিভিন্ন অংশের ঝিল্লীর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংবেদন শীলতা এবং
মাঝারী ও ক্ষুদ্র শ্বাসনালীগুলোর মসৃন মাংসপেশী সমুহের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংকোচন প্রবনতা।
কিভাবে কোন্ উপসর্গ এবং লক্ষণ সুষ্টি হয়?
বিশ্বাস করা হয় শ্বাসনালী বা শ্বাসপথের এই প্রদাহ জনিত কারনেই এস্থমা রোগীর সৃষ্টি হয়:-
01. শ্বাসকষ্টের কারক অবস্থা সমূহ;
02. হুইজ বা রংকাই হওয়ার কারন সমূহ;
03. পূনঃ পুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হওয়ার কারন সমূহ।
এগুলোর কারনে সৃষ্টি হয়ে থাকে নিচের উপসর্গ এবং লক্ষন গুলো; যেমন
(১) ►কফ সহ কাঁশী:-শ্বাসনালী পরিস্কার করার কেন্দ্রিক প্রবনতা হেতু কাশীর সৃষ্টি হয় এবং এতে আঠাঁলো সাদা* কফ বের হয়, (কাশী রাতে বেশী হয়, কাশীর সময় গরম বোধ হয়)।
(২) ►হুইজ:-প্রশ্বাসের সাথে সাথে বাঁশীর শব্দের মতো অগনিত শব্দ, যা সহজে শোনা যায়।
(৩) ►চেষ্ট টাইটনেস:- বুকে চাপ অনুভব করা; যতে বুক ফুলানোর ক্ষমতা কম অনুভব করা, (৪) ►ডিস্পনিয়া:- শ্বাসের কষ্ট অনুভব করা।
এস্থমা রোগীর শ্বাসকষ্টের কারক অবস্থা সমূহ
১. শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন ঝিল্লি ফুলে যায় ও তা থেকে অতিরিক্ত আঠালো মিউকাস নিঃসরন হওয়া,
২. শ্বাসনালীর মসৃন মাংসেপেশী সমূহের সংকোচন শীলতা বেড়ে যাওয়া ও
৩. উপোরক্ত কারনে শ্বাসপথে বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়া।
এস্থমা রোগীর হুইজ বা রংকাই হওয়ার কারন সমূহ
৪. শ্বাসনালীর মসৃন মাংসপেশী সমুহের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংবেদন শীলতা এবং সংকুচিত শ্বাসপথে বাধাপ্রাপ্ত বাতাস চলাচলের ফলে সৃষ্টি হয়
(২) হুইজ:- শীষের মতো বাঁশীর শব্দ যা স্টেথোস্কোপ ছাড়া শোনা যায়;
(৩) রংকাই:-যা বুক ও পিঠের উপরে স্টেথোস্কোপ এর সাহায্যে শোনা যায়।
এস্থমা রোগীর পূনঃ পুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হওয়ার কারন সমূহ
Ø শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন ঝিল্লির অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা ও ঐ কারনে সৃষ্ট শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন ঝিল্লি থেকে অতিরিক্ত নিঃসরন (সাদা আঁঠালো কফ) পরিস্কার করার তাগিদে পূনঃপুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হয়।
Ø ইহাছাড়াও জীবানু সংক্রমন এবং সংকুচিত শ্বাসনালীতে বাতাস চলাচলের কারনে কাশী সৃষ্টি হয়।
উপরোক্ত বিশ্লেষন থেকে উহা অনুমিত হওয়া স্বাভাবিক যে
ð ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর ব্যবস্থাপনায় মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হবে
► শ্বাসকষ্টের কারনে যেন রোগীর জীবন কোন সময় ঝুকি পূর্ন না হয়;
► শ্বাসকষ্টের কারনে যেন রোগী কর্মক্ষমতা না কমে এবং কর্মঘন্টা না হারায়;
►দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের কারনে যেন রোগীর শ্বাসনালী-পথের এবং শ্বাসকলার বৈকল্য না আসে;
►রোগী যেন স্বল্পস্থায়ী বা দীর্ঘ স্থায়ী অক্সিজেন কমতিতে না ভুগে।
ðএবং তাই মূলবিবেচ্য বিষয় হবে
Ø ’’ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর’’ অবস্থার যথাযত মুল্যায়ন করে (স্কোরিং)
Ø শ্বাসনালীর এই অতিরিক্ত সংবেদনশীলতার যথাযত নিয়ন্ত্রন এবং কমানো ও
Ø শ্বাসনালীর সংকোচন-শীলতা প্রতিরোধ করে প্রসারনশীলতা বাড়া
গর্ভাবস্থায় পানি ভাঙা ও করণীয়
গর্ভাবস্থায় পানি ভাঙা ও করণীয়
সাধারণত অ্যামনিওটিক মেমব্রেন রাপচার বা পানি ভাঙার ঘটনা হয় লেবার পেইন ওঠার পর। কোনো কারণে যদি এর আগেই মেমব্রেন রাপচার হয়ে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড বা গর্ভস্থ পানি বের হয়ে যায়, তবে তাকে প্রিম্যাচিওর রাপচার অব মেমব্রেন বলে। এটি গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা, যা নিয়ে অনেকে শঙ্কিত থাকেন।
ভুলগুলো
গর্ভাবস্থায় কানো কারণে মাসিকের রাস্তা দিয়ে যদি অতিরিক্ত পানি বের হয়, তবে বেশির ভাগ গর্ভবতী নারী ধরে নেন, এটা বাচ্চার পানি—অর্থাৎ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ রকম ধারণা ভুল হতে পারে। অনেক সময় অনেক কারণেই এমন হতে পারে। তা ছাড়া ইউরিন বা প্রস্রাব বের হলেও তা অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মতোই মনে হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ভ্যাজাইনাল সিক্রেশন অনেক বেড়ে যায়। ফলে মাঝেমধ্যে এই নরমাল সিক্রেশনকেও অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ভেবে অনেকে ভুল করে থাকেন।
পরীক্ষা
এ সময় ভালোভাবে রোগীর ইতিহাস নিলেই কিছুটা আইডিয়া করা যায় যে আসলেই মেমব্রেন রাপচার হয়েছে কি না। এটা হলে সাধারণত একসঙ্গে অনেক পানি বের হবে এবং পেটিকোট বা পরনের কাপড় ভিজে যাবে। এ ছাড়া স্পেকুলাম এক্সামিনেশনের মাধ্যমে জরায়ুর মুখ সরাসরি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে জানা যাবে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কতটা আছে। মেমব্রেন রাপচার হয়েছে কি না এ সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য মিলবে না।
ফলাফল
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এমনটি হয়ে থাকলে একে সাধারণত অ্যাবরশন হিসেবেই ধরা হয়। আর যদি বাচ্চা ম্যাচিওর হতে কিছুদিন বাকি থাকে, তবে রোগীকে হাসপাতালে বেড রেস্টে রেখে বাচ্চার ম্যাচিওরিটি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আর এর মধ্যেই লেবার পেইন বা ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে সেই গর্ভাবস্থা আর নিয়মিত করা সম্ভব হয় না। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে পানি ভাঙলে মাকে ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে লেবার পেইন উঠে যায়। যদি পেইন না থাকে, তবে ইন্ডাকশন (ওষুধের মাধ্যমে লেবার পেইন শুরু) করাও সম্ভব।
সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড রাপচার বা পানি ভাঙা একটি জরুরি সমস্যা। কারণ এই মেমব্রেন গর্ভস্থ বাচ্চাকে বাইরের জীবাণু থেকে রক্ষা করে। তাই মেমব্রেন রাপচার হলে রোগীকে জীবাণুমুক্ত প্যাড ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়, অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা হয়। একই সঙ্গে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এবং প্রস্রাব পরীক্ষা করে দেখা হয় কোনো ইনফেকশনের লক্ষণ আছে কি না। কারণ বিভিন্ন ইনফেকশনের কারণেও মেমব্রেন রাপচার হতে পারে।
তাই পানি ভাঙার লক্ষণ দেখা দিলেই গর্ভবতী নারীদের উচিত অনতিবিলম্বে নিকটস্থ চিকিৎসককে অবহিত করা।
বর্ষায় শ্বাসরোগ
বর্ষায় শ্বাসরোগ
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের পর বহুপ্রতীক্ষিত বর্ষা স্বভাবতই আমাদের মনকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়। কিন্তু এই আনন্দের মধ্যেও দুঃসংবাদ হলো, এই বৃষ্টি কিছু শ্বাসরোগও বয়ে আনে। তাই কেউ যদি বাইরে গিয়ে হঠাৎ ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে যান, তাহলে তিনি অ্যালার্জির রিঅ্যাকশনে পড়তে পারেন। ফলে অতিরিক্ত হাঁচি আসা, সর্দি-ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তখন এসব উপসর্গকে খুব বেশি গুরুত্ব না দিলে সমস্যা বেড়ে গিয়ে ফুসফুসে প্রদাহ ও ইনফেকশন হতে পারে, কফ-কাশি বা নিউমোনিয়াও হতে পারে। নিউমোনিয়ার উপসর্গগুলো হচ্ছে—জ্বর, কাশি, কফ, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কখনো বুকে অস্বাভাবিক শব্দ ইত্যাদি। আর বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা যায় খাদ্যে অরুচি, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, ক্লান্তি লাগা ইত্যাদি।
তা ছাড়া বর্ষার ভাপসা আবহাওয়ায় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বেড়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষত শিশুদের অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় সর্দি-কাশি। আগে থেকে শ্বাসকষ্টের রোগীদের যেকোনো সংক্রমণ হলেও উপসর্গগুলো আরো বাড়িয়ে দেয়।
ভালো থাকার উপায়
♦ বর্ষার সময় সাবধানতার সঙ্গে বাইরে যান, যাতে করে হুটহাট বৃষ্টিতে ভিজে না যান।
♦ আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে জানুন।
♦ সব সময় ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে রাখুন।
♦ বাড়তি এক সেট জামাকাপড় সঙ্গে রাখতে পারেন।
♦ এ সময় সর্দি-হাঁচি-কাশিকে অবহেলা করবেন না। কাশির সঙ্গে হলুদ কফ দেখা গেলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
♦ যাঁরা আগে থেকেই শ্বাসকষ্টের রোগী (যেমন—অ্যাজমা, সিওপিডি ইত্যাদি), তাঁরা অবশ্যই নিয়মিত ওষুধ সেবন করবেন।
♦ উপসর্গ বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
♦ বর্ষায় বাড়িঘর, বিছানাপত্র স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়, ছত্রাক বাসা বাঁধে। তাই যাঁরা অ্যাজমার রোগী তাঁরা চারপাশ পরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখুন।
♦ নির্দেশিত কিছু ভ্যাকসিন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
দশটি সেরা ওজন কমানোর উপায়
দশটি সেরা ওজন কমানোর উপায়
যারা দেহের বাড়তি ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন, “ওজন কমানোর উপায়” খুঁজছেন তাদের জন্য এই ব্লগটি ভীষণ কার্যকরী হবে। এই ব্লগটিতে আপনারা পাবেন সবচেয়ে কার্যকরী এবং সহজ দেহের অতিরিক্ত ওজন শুধু দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক সমস্যাই সৃষ্টি করে না, এটি মানসিক সমস্যা সৃষ্টিরও একটি কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে আপনার জীবনে। নিচে দশটি সেরা ও সহজ ওজন কমানোর উপায় দেওয়া হল।
Push Up Exercise to Loss weight
১. Exercise Regularly To Lose Weight ( নিয়মিত ব্যায়াম করুন) :
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হালকা ব্যায়াম করুন অথবা দৌড়ান। সকাল বেলা কম করে হলেও নিয়ম করে আধ ঘন্টা Exercise করুন। Exercise করার ক্ষেত্রে পুশ -আপ ব্যায়াম ভীষণ কার্যকরী।ব্যায়াম শরীর কে যেমন ফিট রাখে তেমনি মানসিক শান্তিও প্রদান করে।
২. লেবু জলের সাহায্যে ওজন কমানোর উপায়:
ওজন কমানোর জন্য লেবু জলের জুড়ি মেলা ভার। লেবুতে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড যা দেহের অতিরিক্ত ফ্যাট কমিয়ে দেয় ফলে দেহের ওজন দ্রুত কমে যায়। সকাল বেলা ব্যায়াম করা হয়ে গেলে ২০ থেকে ২৫ মিনিট বিশ্রাম করুন। এরপর একগ্লাস হালকা গরম জল নিন। এবার একটি পাতি লেবুর রস এই জলের সাথে মিশিয়ে নিন। এর পর একচামচ মধু জলের সাথে মিশিয়ে ভালো করে চামচ দিয়ে নেড়ে এই জল পান করুন। প্রতিদিন নিয়ম করে লেবুজল পান করলে খুব দ্রুতই ওজন আপনার কমবে।
৩. Lose Weight By White Part of Egg (ওজন কমাতে সকালের ব্রেকফাস্টে খান ডিম্):
লেবু জল পান করার আধ ঘন্টা পর সকালের খাবার খাবেন (সকাল ৮ টার দিকে) . সকালের খাবারে তেল জাতীয় খাবার এবং ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন। মেনুতে অবশ্যই একটি ডিম্ রাখুন। মনে রাখবেন আপনি ডিমের শুধু সাদা অংশটিই খাবেন। ডিমের কুসুম কোনভাবেই খাবেন না। ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন যা দেহে প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে দেহের অতিরিক্ত চর্বি জমতে বাধা দেয় , ফলে দেহের ওজন কমে। অন্য্ দিকে ডিমের কুসুমে থাকে ফ্যাট যা দেহে চর্বি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেজন্য ডিমের কুসুম ভুলেও খাবেন না যারা অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাচ্ছেন।
৪. Avoid These Food To Loose Weight (খাবারের মেনু থেকে যে খাবারগুলি বাদ দেবেন):
ওজন কমানোর জন্য খাবারের মেনু থেকে অবশ্যই মশলা জাতীয় এবং চর্বি জাতীয় খাবারগুলোকে বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত মসলা এবং চর্বি জাতীয় খাবার দেহে চর্বি বৃদ্ধি করে এবং দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করে। সুতরাং অতিরিক্ত তেল , মসলা এবং চর্বি জাতীয় খাবার যেমন দুধ, ঘি, আইসক্রিম, মাখন ইত্যাদি খাবার একদম এড়িয়ে চলুন।
৫. Add These Food To Your Menu To Loss Weight (যে খাবারগুলি মেনুতে এড করবেন):
ওজন কমানোর জন্য খাবারের মেনুতে রাখুন অধিক শাক সবজি। চর্বিহীন মাংস সয়াবিন , ছোটমাছ ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খান। খাবারের মেনুতে অবশ্যই শশা, গাজর , টমেটো ইত্যাদি দিয়ে তৈরি স্যালাড রাখুন।
৬. Eat More Fruit To Lose Weight Fast (ওজন কমাতে প্রতিদিন ফল খান) :
ওজন কমাতে ফলের ভূমিকা অপরিসীম। বিভিন্ন ধরণের টক জাতীয় ফল যেমন আঙ্গুর, আপেল, কমলা লেবু, পেয়ারা, ইত্যাদি ফলে থাকে অ্যাসিড যা দেহের চর্বি কম করে। এর ফলে আপনার দেহের ওজন কমবে দ্রুত। এজন্য প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ফল বা একগ্লাস ফলের জুস্ পান করুন।
৭. গ্রিন টি এর সাহায্যে ওজন কমানোর উপায় :
ওজন কমাতে গ্রিন টি এর জুড়ি মেলা ভার। গ্রিন টি ওজন কমাতে টনিকের কাজ করে। গ্রিন টি তে থাকে একটি বিশেষ ধরণের এন্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দেহের অতিরিক্ত ফ্যাট বার্ন আউট করে এবং ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। স্বভাবতই খাওয়া কমে গেলে এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত ফ্যাট কমে গেলে ওজন কমতে বাধ্য। তবে গ্রিন টি কখনোই চিনি দিয়ে তৈরি করবেন না।
৮. Avoid Rice at Night to lose Weight Fast (রাতের বেলায় ভাত একদম নয়) :
ওজন কমাতে চাইলে রাতের বেলায় ভাত একদম খাবেন না। ভাতের বদলে রুটি খান। ভাত দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সুতরাং রাতের বেলায় ভাতের বদলে ২ থেকে ৩ টি রুটি খাবেন এবং বেশি করে শাক সবজি খাবেন।
৯. Fast One Day Per week To Lose Weight (সপ্তাহে একদিন উপোস থাকুন) :
আধুনিক বিজ্ঞান অনুযায়ী যারা সপ্তাহে অন্তত একদিন দিনের বেলায় ৮ থেকে ও 9 ঘন্টা না খেয়ে থাকেন বা উপোস থাকেন তাদের দেহে কখনোই মেদ জমতে পারে না। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এর উল্লেখ রয়েছে। এর মূল কারণ হল আমরা যখন না খেয়ে থাকি তখন দেহে জমে থাকা চর্বি বার্ন আউট হয়ে দেহে শক্তি উৎপন্ন হয়। ফলে দেহে চর্বি জমে থাকতে পারে না এবং দেহের ওজন ও কম হয়ে যায়।
১০. ওজন কমানোর জন্য নিয়ম করে ঘুমান :
ওজন কম করতে চাইলে অতিরিক্ত ঘুম বা কম ঘুম চলবে না। কারন অতিরিক্ত বা কম ঘুম দেহের হজম শক্তির উপর প্রভাব ফেলে। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুন্ পর্যন্ত বেড়ে যায়। রাতের বেলায় ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমোন। কিন্তু দিনের বেলায় কখনোই ঘুমোবেন না। কারন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে দিনের বেলায় ঘুমোলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা ১০০% পর্যন্ত বেড়ে যায়।
বিঃ দ্রঃ :
ওজন কমানোর উপায়
এর জন্য সবচেয়ে জরুরি পজিটিজ মাইন্ড এবং নিয়মিত উপরের টিপস গুলি ফলো করা , তাহলেই আপনি সফল হতে পারবেন।
Note- These weight loss tips in Bangla will be very effective if you follow all the weight loss tips and instruction carefully.