সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৯
রমজান মাসের খাবারের তালিকা যা রাখা যায়
রমজান মাস মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস। এসময় সতর্কতার সাথে চললে সুস্থ থেকে সিয়াম সাধনার পাশাপাশি সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে থাকা সম্ভব। রোজার মাসে অসুস্থ ব্যক্তি যদি রোগ অনুযায়ী সঠিক খাদ্য নির্বাচন করে তাহলে রোজা রাখার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হয়না। একজন সুস্থ ব্যক্তি যদি সঠিকভাবে খাদ্য নির্বাচন করে তাহলে স্বাভাবিকভাবে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা করতে পারেন। রোজার সময় সাধারনত: তিন বার খাবার গ্রহণ করা হয়। সূর্যাস্তের পর প্রথম খাবার হলো ইফতার, তারপর সন্ধ্যারাতের খাবার ও সেহেরী। অন্যান্য দিনের খাদ্য তালিকায় যেভাবে খাদ্য গ্রহণ করা হয় ঠিক সেভাবে রমযানেও প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
ইফতারে তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার, রাস্তার পাশে খোলা খাবার, বিভিন্ন আকৃষ্ট পানীয় যেমন- কাটা ফল, আমের রস ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার হজমে ব্যাঘাত ঘটিয়ে জন্ডিস, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস ইত্যাদি রোগের কারণ হতে পারে। বাহিরের খোলা খাবার, অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার বিভিন্ন অসুস্থতা যেমন- আলসার, গ্যাসিট্রিক, পেটফাপা ইত্যাদির কারণ হতে পারে। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার চা-কফি কোমল পানীয় ইত্যাদি যথা সম্ভব কম খাওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত খাবার শরীরের ওজন বাড়িয়ে শরীরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে।
ইফতার, সন্ধ্যারাত ও সেহেরীতে সহজপাচ্য ও পরিমিত পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা উচিত। অনেকে পেট পুরে ইফতার খেয়ে সন্ধ্যারাতে খাবার খান না। আবার অনেকে রাত করে খাবার খেয়ে সেহেরী খান না। এতে শরীর দুর্বল, ক্লান্ত ও অবসাদ দেখা দেয় এবং এ নিয়ম স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আবার অনেকে মনে করেন, সন্ধ্যারাতে না খেয়ে সেহেরীতে বেশী খেলে ক্ষুধা কম লাগে। এটি একটি ভ্রান্ত ধারনা।
ইফতারের প্রথম খাবার হলো পানি জাতীয় খাবার যেমন শরবত্, লেবু, বেল, চিড়া, ডাবের পানি, তেতুল, রুহ আফজা, লাচ্ছি, বিভিন্ন মৌসুমী ফল, আনারস, তরমুজ, জামরুল, মাল্টা, জাম্বুরা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা যায় যা শরীরের পানি শুন্যতা, কৌষ্টকাটিন্য, পেটের অসুখ দূর করে বিভিন্ন ভিটামিন ও খণিজ লবণের চাহিদা মেটায় এবং শরীর সুস্থ রাখে। ইফতার থেকে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। ইফতারের পর পর প্রচুর পানি না খেয়ে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত এ পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তথা বিভিন্ন ডাল জাতীয় খাবার যেমন- ছোলা, পেয়াজ, ঘুঘনী, বেগুনী, চটপটি ইত্যাদি। হালিম একটি পুষ্টিকর খাবার যাতে চাল, ডাল, গম, মাংস, তেল, পেয়াজ, কাঁচামরিচ, আদা, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, লেবু ইত্যাদি থাকে। এতে খাদ্যের ছয়টি উপাদানই রয়েছে। ঘরের তৈরি হালিমই ভাল ও পুষ্টিকর।
সন্ধ্যারাতের খাবারে মাছ, মাংস, ডাল, ডিম ইত্যাদি থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়। সেহেরীতে মাছ অথবা মাংসের খাদ্য ব্যবস্থা রাখা যায়। সাধারণত: রমজানে তুলনামূলক ডাল জাতীয় খাবার বেশী খাওয়া হয়। তাই পরিমিত পরিমাণ মাছ বা মাংস গ্রহণ করতে হবে যাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুধ, দই, টক দই, দুধ জাতীয় খাবার ইত্যাদি সেহেরীতে খাওয়া যায়। ইফতারে যেহেতু তেলে ভাজা খাবার বেশী খাওয়া হয় তাতে ফ্যাটের চাহিদা মিটে যায়। এসময় বাড়তি তেল ও তেল জাতীয খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চিড়া, মুড়ি, ভাত, রুটি, চিনি, গুড় ইত্যাদি শরীরের শক্তির চাহিদা মেটায়। শরবতে চিনির পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে। ইফতারে মিশ্র পাতলা খিচুরী খাওয়া যায়। ইফতারীতে ফল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন ও খণিজ লবণ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কলা, পাকা পেঁপে, আম, আনারস, জাম্বুরা, পেয়ারা, আমড়া, কামরাংগা, কমলা, মাল্টা, ডালিম ইত্যাদি দিয়ে ইফতার করা যায়। ইফতারে ফল হজমে বড় ভূমিকা রাখে। ইফতারে শাকের বড়া, সন্ধ্যারাতে ও সেহেরীতে যে কোন শাক সব্জি ইচ্ছামত খাওয়া যায়। সবুজ শাক শব্জি, ফল বিভিন্ন ভিটামিন ও খণিজ লবণ-এর চাহিদা মিটিয়ে থাকে।
রমজান মাসে খাদ্য তালিকায় আঁশ জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আঁশ জাতীয় খাবার কৌষ্টকাঠিন্য দূর করে ও রক্তে কোলেস্টেরল-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সেহেরী খেয়ে ১০-২০ মিনিট হাঁটলে হজমে সহায়ক হয়।
রমযান মাসে অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে সহজে পাচ্য এবং পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
প্রথমে শরবত তারপর চিড়া-দই, দুধ কলা, ক্ষীর, পায়েস, কাস্টার্ড ইত্যাদি ঠান্ডা খাবার খেয়ে পরে তেলে ভাজা খাবার বুট, পেয়াজু, বেগুনী ইত্যাদি আস্তে আস্তে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে হজমে সহায়ক হয় এবং শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। মনে রাখতে হবে ঘরে তৈরী ইফতার নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়।
কপি পেষ্ট।
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯
বৃক্ক বা কিডনির পরিচিতি
ইংরেজিতে: কিডনি
বৃক্ক দেহের রেচনতন্ত্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে এক জোড়া বৃক্ক থাকে। মানুষের দেহের বৃক্কের গড়ন অনেকটা শিমের মতো। এই অঙ্গ দুটি উদরের পিছনের দিকে থাকে। বৃক্ক মূূূত্র উৎপাদন করে এবং সেই সাথে শরীরের জল ও ইলেকট্রলাইট (সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ইত্যাদি) এর ভারসাম্য বজায় রাখে।
দেহের পেছনদিকে বক্ষপিঞ্জরের নিচে মেরুদণ্ডের দুই পাশে একটি করে দুইটি বৃক্ক থাকে। বৃক্কদ্বয় ডর্সাল অ্যাওর্টার সাথে সংযুক্ত থাকে। মানুষের প্রত্যেকটি বৃক্কের রঙ লালচে, কিছুটা চাপা, অনেকটা শিমের বীজের মতো। ডান বৃক্কটি বাম বৃক্ক অপেক্ষা খানিকটা নিচে অবস্থিত। বৃক্কের ভেতরের দিকটি অবতল এবং বাইরের দিকটি উত্তল। অবতল অংশে হাইলাস নামক অনেকগুলো ভাজ দেখা যায়। এর ভেতর দিয়ে রেনাল শিরা ও ইউরেটর বহির্গত হয়। আবার, রেনাল ধমনী ও স্নায়ু এর মাধ্যমেই বৃক্কে প্রবেশ করে। সমগ্র বৃক্ক যোজক কলা নির্মিত ক্যাপস্যুলের ভিতরে থাকে । একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যাক্তির বৃক্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০-১২সে.মি. , প্রস্থ ৫-৬ সে.মি. ও স্থূলত্ব প্রায় ৩ সে.মি.। পূর্ণবয়স্ক পুরুষের বৃক্কের ওজন প্রায় ১৫০-১৭০গ্রাম এবং পূর্ণবয়স্ক মহিলার বৃক্কের ওজন প্রায় ১৩০-১৫০গ্রাম।
বৃক্কের লম্বচ্ছেদ করা হলে সুস্পষ্ট দুটি অংশ দেখা যায়। এগুলো হল, কর্টেক্স ও মেডুলা। কর্টেক্স বৃক্কের ক্যাপস্যুলের সাথে সংযুক্ত এবং মেডুলাকে বৃক্কের অভ্যন্তরে দেখা যায়। নেফ্রনের ফমালপিজিয়ান কণিকা, প্রক্সিমান নালিকা, ডিস্টাল নালিকা ও রক্তবাহিকা বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থান করে। অপরদিকে নেফ্রনের বাকি অংশ, যেমন— লুপ অব হেনলি, সংগ্রাহী নালিকা, রক্তবাহিকাগুলো মেডুলায় দেখা যায়। উক্ত অংশগুলো সম্মিলিতভাবে রেনাল পিরামিড গঠন করে। এভাবে অনেকগুলো রেনাল পিরামিড গঠিত হয়। পিরামিডের চূড়াকে বলা হয় প্যাপিলা(papilla)।
নেফ্রন ইংরেজি nephron।
বৃক্কের অভ্যন্তরে প্রায় ১০ লক্ষ নেফ্রন থাকে। এগুলো প্রায় ৩ সে.মি লম্বা। বৃক্কে থাকা নেফ্রনের নালিকাগুলো জোড়া দিলে তার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৬ কি.মি. লম্বা হবে। বৃক্কে থাকা নেফ্রনের অবিরত কাজের ফলে প্রতি মিনিটে প্রায় ১২৫ ঘন সে.মি. তরল রক্ত পরিশ্রুত হয়। এর ৯৯% পানিই বিশোধিত হয়ে রক্তে ফিরা যায়। প্রতি ঘন সে.মি. মূত্র সৃষ্টি হতে সময় লাগে প্রায় ১মিনিট।
বৃক্কের গ্লোমেরুলাস-এর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহকালে রক্ত থেকে গ্লুকোজ, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, লবণ, পানি ইত্যাদি ক্যাপসুলে প্রবেশ করে। বৃক্কীয় নালিকা অতিক্রম করার সময় প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ, পানি, লবণ ইত্যাদি পুনরায় শোষিত হয় এবং অবশিষ্টাংশ মূত্র হিসেবে বের হয়।
নেফ্রনকে ২ ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা—
১. রেনাল করপাসল বা মালপিজিয়ান বডি
২. রেনাল টিউব্যুল
১. রেনাল করপাসল (Renal Corpuscle) : নেফ্রনের অগ্রপ্রান্তকে বলা হয় রেনাল করপাসল। এটি বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থিত। রেনাল করপাসল ২টি অংশে বিভক্ত। ভাগ দুটি হলো— রেনাল ক্যাপস্যুল ও গ্লোমেরুলাস | ||
১.১. রেনাল ক্যাপস্যুল (Renal Capsule) : রেনাল করপাসলে অবস্থিত গ্লোমেরুলার কৈশিক জালিকগুচ্ছকে ঘিরে থাকে। এগুলো আইশাকার এপিথেলিয়াম দ্বারা গঠিত। এর আকার দ্বিস্তরী পেয়ালার মতো। এই অংশকে রেনাল ক্যাপস্যুল বলা হয়। এতে গ্লোমেরুলাস সংলগ্ন অংশকে বলা হয় ভিসেরাল স্তর। এটি পোডোসাইট নামক প্রবর্ধনযুক্ত কোষ দ্বারা তৈরী। বহিঃপ্রাচীরকে প্যারাইটাল স্তর বলে। প্যারাইটাল স্তরটি আইশাকার এপিথেলিয়াল কোষ দ্বারা আবৃত। ভিসেরাল স্তর ও প্যারাইটাল স্তরে মধ্যবর্তী স্থানকে বলা হয় ক্যাপস্যুলার স্পেস। | ||
১.২. গ্লোমেরুলাস (Glomerulus) : গ্লোমেরুলাস রেনাল ক্যাপস্যুলে প্রায় আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। এটি অ্যাফারেন্ট ধমনী থেকে কৈশিক জালিকাকারে গ্লোমেরুলাস সৃষ্টি হয়। একটি গ্লোমারুলাসে প্রায় ৫০ টি কৈশিকজালিকা দেখা যায়। জালিকাগুলোর প্রাচীর অর্থাৎ এন্ডোথেলিয়াম খুব পাতলা। এতে অসংখ্য ছিদ্র দেখা যায়।একটি ভিত্তিঝিল্লির উপর জালিকার সমস্ত এপিথেলিয়াম কোষ অবস্থিত। উৎপন্ন কৈশিকজালিকাগুলো মিলে গিয়ে ইফারেন্ট ধমনী সৃষ্টি করে ক্যাপস্যুল থেকে বেরিয়ে আসে। ইফারেন্ট ধমনী ও কৈশিকজালিকার ব্যাস অ্যাফারেন্ট ধমনীর ব্যাস অপেক্ষা বেশি। | ||
২. রেনাল টিউব্যুল (Renal Tubule) : রেনাল ক্যাপস্যুলের অঙ্কীয়দেশ থেকে শুরু হয়ে সংগ্রাহক নালিকা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ৩ সে.মি. লম্বা ও ২০ থেকে ৬০ মাইক্রন চওড়া নালিকাকে রেনাল টিউব্যুল বলে। দুটি বৃক্কে মোট প্রায় ২৪ লক্ষ রেনাল টিউব্যুল দেখা যায়, যেগুলোকে জোড়া দিলে দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭২ কি.মি. বা ৪৫ মাইল। প্রত্যেকটি রেনাল টিউব্যুলে ৪টি অংশ দেখা যায়। এই অংশগুলো হলো— প্রক্সিমান প্যাচানো নালিকা, লুপ অব হেনলি, ডিস্টাল প্যাচানো নালিকা ও সংগ্রাহী নালিকা। | ||
২.১. প্রক্সিমাল প্যাচানো নালিকা (Proximal Convoluted tubule): এটি নেফ্রনের বৃহত্তম অংশ। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ মি.মি. ও প্রস্থ প্রায় ৬০ মাইক্রো মি.। এর প্রাচীর একস্তরী ঘনতলীয় কোষে গঠিত। নালিকা গহ্বর সংলগ্ন কোষপ্রান্ত অসংখ্য মাইক্রোভিলাই থাকে। নালিকার অন্যা প্রান্ত ভিত্তিঝিল্লীর উপর থাকে। ভেতরের দিকটি ভাজ হয়ে চ্যানেল তৈরি করে। ২.২. লুপ অব হেনলি (Loop of Henle) : লুপ অব হেনলি প্রক্সিমাল প্যাচানো নালিকার শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে সোজা নিম্নগামী হয়ে মেডুলায় প্রবেশ করে। অতঃপর U আকৃতির লুপ তৈরি করে প্রান্তীয় প্যাচানো নালিকায় শেষ হয়। এতে ৩টি অংশ দেখা যায়। এগুলো হল, নিম্নগামী বাহু, পাতলা উর্ধ্বগামী বাহু ও স্থূল উর্ধ্বগামী বাহু। নিম্নগামী বাহু আইশাকার কোষ দ্বারা গঠিত। পাতলা উর্ধ্বগামী বাহুতে আইশাকার পাতলা প্রাচীর দেখা যায়। স্থুল উর্ধ্বগামী বাহুতে ঘনতলীয় কোষের প্রাচীর দেখা যায়। ২.৩. ডিস্টাল প্যাচানো নালিকা (Distal Convoluted tubule): লুপ অব হেনলির স্থূল উর্ধ্বগামী বাহুর পরবর্তী অংশ হল ডিদ্টাল প্যাচানো নালিকা। এর সাথে অ্যাফারেন্ট ধমনীর সংযোগ থাকে। এখানে উভয়ের উভয়ের কোষগুলো ক্ষরণকারী কোষে পরিবর্তিত হয়ে জাক্সটাগ্লোমেরুলার কমপ্লেক্স গঠন করে। ২.৪. সংগ্রাহী নালী (Collecting duct) : এটি ডিস্টাল নালিকার পরবর্তী অংশ। এটি নেফ্রনেরও সর্বশেষ অংশ। এর কিছু অংশ কর্টেক্সে আর বাকীটুকু মেডুলায় দেখা যায়। এটি সোজা ও ঘনতলীয় কোষে গঠিত। কয়েকটি সংগ্রাহী নালী একত্রিত হয়ে স্তম্ভাকার বেলিনির নালী গঠন করে। বেলিনির নালী পেলভিসে রেনাল পিরামিডে প্যাপিলার ছিদ্রপথে উন্মুক্ত হয়। |
১. রক্তে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য ঠিক রাখা
২. পানির ভারসাম্য রক্ষা করা
৩. লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা
৪. রক্ত হতে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করা
৫. ভিটামিন ডি তৈরি করা
৬. মূূূত্র উৎপাদন এবং নির্গত করার কার্যক্রম সম্পন্ন করা।
আর বৃক্ক বা কিডনি ভাল রাখতে খেতে পারেন ১০০% নিরাপদ রেনাল (শরবতে বুয়ুরী)
সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০০/ টাকা মাত্র।
বিঃদ্রঃ বাংলাদেশ একমাত্র ইউনানি ফুর্মূলা অনুযায়ী রেনাল বা শরবত বুয়ুরী তৈরি করে ইয়থ ল্যাবরেটরিজ ইউনানি লি:। আর অনলাইনে বিক্রয় করছে হেলথ হারবাল বিডি।
সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৯
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার ৭টি ঘরোয়া প্রতিকার
আপনার অথবা আপনার আশে পাশের অনেকেই গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে অনেকেই অনেক খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু তারপরেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বাঁচতে পারেন না। গ্যাস্ট্রিকের মূল কারণগুলো হলো এসিডিটি, হজমের সমস্যা, বুক জ্বালা পোড়া করা ইত্যাদি। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথার আরো কিছু কারণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ফুড পয়জনিং, কিডনিতে পাথর, আলসার ইত্যাদি। আসুন জেনে নেয়া যাক গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়।
একটি মাঝারী আকৃতির লেবু চিপে রস বের করে নিন। এরবার লেবুর রসের সাথে আধা টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক কাপ পানি মিশিয়ে নিন। বেকিং সোডা ভালো করে মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়ুন। এবার মিশ্রণটি খেয়ে নিন। নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথায় সাথে সাথে আরাম পেতে চাইলে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক চা যেমন সবুজ চা, পুদিনা চা, তুলসী চা এগুলো হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করে।
তেঁতুল পাতা মিহি করে বেটে নিন। এবার তেঁতুল পাতা বাটা এক গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে সহজেই।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় পানি খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সাড়া দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি খেলে পেটে এসিড হয় না এবং হজম শক্তি বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭ থেক ৮ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যাবে কিছুদিনের মধ্যেই।
পেটে গ্যাসের সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো আদা খাওয়া। প্রতিবেলা খাবার খাওয়ার পর এক টুকরা আদা মুখে নিয়ে চিবিয়ে রস খান। তাহলে পেটে গ্যাস জমবে না এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার থেকে মুক্তি মিলবে। যারা আদা সরাসরি খেতে পারেন না তাঁরা রান্নায় বেশি করে আদা ব্যবহার করুন।
ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এছাড়াও গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
লেবুর ব্যবহার
একটি মাঝারী আকৃতির লেবু চিপে রস বের করে নিন। এরবার লেবুর রসের সাথে আধা টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক কাপ পানি মিশিয়ে নিন। বেকিং সোডা ভালো করে মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়ুন। এবার মিশ্রণটি খেয়ে নিন। নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথায় সাথে সাথে আরাম পেতে চাইলে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
প্রাকৃতিক চা
তেঁতুল পাতা
প্রচুর পানি পান করুন
আদা
ডাবের পানি
আলুর রস
আলু বেটে কিংবা ব্লেন্ডারে ব্ল্রেন্ড করে চিপে রস বের করে নিন। এবার এই রস প্রতিবার খাওয়ার আগে খেয়ে নিন। এভাবে তিন বেলা খাওয়ার আগে আলুর রস খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৯
তুলশী পাতার অতুলনীয় সব গুনাবলী
তুলসী একটি ঔষধিগাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধিযুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর। এটি সর্দি, কাশি, কৃমি ও বায়ুনাশক এবং মুত্রকর, হজমকারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক। মানুষ একসময় প্রকৃতি থেকেই তাঁর অসুখ বিশুখের পথ্য আহরন করতো। বিভিন্ন গাছ , লতা , পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো। এসবে কোন পার্স প্রতিক্রিয়া নেই। মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে, এসবকে পরিত্যাগ করছে। তবে চীন এবং ভারতে এই ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে।
১। নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুণ আছে। তুলসি পাতা নার্ভ টনিক ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি কারী। এটা শ্বাস নালী থেকে সর্দি–কাশী দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম নিঃসৃত হতে সাহায্য করে।
২। জ্বর ভালো করে
তুলসীর জীবাণু নাশক, ছত্রাক নাশক ও ব্যাক্টেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার জ্বর পর্যন্ত ভালো করতে পারে তুলসী পাতা।
– আধা লিটার পানিতে কিছু তুলসী পাতা ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিন
– এক্ষেত্রে তুলসী ও এলাচ গুঁড়ার অনুপাত হবে ১:০.৩
– জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণটিকে অর্ধেক করে ফেলুন
– মিশ্রণটির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পর পর পান করুন
– এই মিশ্রণটি শিশুদের জন্য অনেক কার্যকরী।
বিভিন্ন প্রকার জ্বরে তুলসীপাতার রসের ব্যবহার অনেকটা শাস্ত্রীয় বিষয় হিসেবে পরিচিত। বিশেষত ঋতু পরিবর্তন হেতু যে জ্বর, ম্যালেরিয়া জ্বর এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে সমাজে। এর জন্য কচি তুলসীপাতা চায়ের সাথে সেদ্ধ করে পান করলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
*. একিউট জ্বরে তুলসীপাতার সেদ্ধ রসের সাথে এলাচিগুঁড়া এবং চিনি ও দুধ মিশিয়ে পান করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। গলক্ষতের জন্য তুলসীপাতা সেদ্ধ পানি পান করলে এবং গারগল করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
তুলসী পাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে ফুসফুসীয় সমস্যায়। ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি এবং ঠাণ্ডাজনিত রোগে তুলসী পাতার রস, মধু ও আদা মিশিয়ে পান করলে উপশম পাওয়া যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে তুলসী পাতার রস, লবণ ও লবঙ্গ মিশিয়ে পান করলে ফল পাওয়া যায়। এ ধরনের রোগের ব্যবহারের জন্য তুলসী পাতা আধা লিটার পানিতে সেদ্ধ করতে হয় ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষন তা অর্ধেকে পরিণত হয়।
৩। ডায়াবেটিস নিরাময় করে
তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল ও ক্যারিওফাইলিন উৎপন্ন করে। এই উপাদান গুলো অগ্নাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে( বিটা সেল ইনসুলিন জমা রাখে ও নিঃসৃত করে)। যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৪। কিডনি পাথর দূর করে
রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেলকে কমতে সাহায্য করে কিডনিকে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যাথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে।
৫। ক্যান্সার নিরাময় করে
তুলসীর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সার এর বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে। কারণ এর উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়। উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খান।
৬। তুলসীপাতার রস শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষত শিশুদের ঠাণ্ডা লাগা, জ্বর হওয়া, কাশি লাগা, ডায়রিয়া ও বমির জন্য তুলসীপাতার রস ভালো কাজ করে। জলবসন্তের পুঁজ শুকাতেও তুলসীপাতা ব্যবহৃত হয়।
৭। মানসিক চাপ কমায়: মানসিক চাপে অ্যান্টিস্ট্রেস এজেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ প্রশমনে এমনকি প্রতিরোধে তুলসী চমৎকার কাজ করে। কোনো সুস্থ ব্যক্তি যদি প্রতিদিন অন্তত ১২টি তুলসীপাতা দিনে দু’বার নিয়মিত চিবাতে পারেন তাহলে সেই ব্যক্তি কখনো মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হবেন না বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে তুলসি পাতা। স্নায়ু শিথিল করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ফ্রি রেডিকলকে নিয়ন্ত্রণ করে। অতিরিক্ত অবসাদ এবং মানসিক চাপ অনুভূত হলে ১০ থেকে ১২টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেয়ে নিন, উপকৃত হবেন।তুলসীর স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতা আছে। সুস্থ মানুষও প্রতিদিন ১২ টি তুলসী পাতা চিবালে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারবেন।
৮। মুখের ঘা দূর করতেঃ তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে। মুখের ঘা শুকাতেও তুলসীপাতা ভালো কাজ করে। মুখের ইনফেকশন দূর করতে তুলসীপাতা অতুলনীয়। প্রতিদিন কিছু পাতা (দিনে দুবার) নিয়মিত চিবালে মুখের সংক্রমণ রোধ করা যেতে পারে। চর্মরোগে তুলসীপাতার রস উপকারী। দাউদ এবং অন্যান্য চুলকানিতে তুলসীপাতার রস মালিশ করলে ফল পাওয়া যায়। ন্যাচার অ্যাথিতে শ্বেতীরোগের চিকিৎসায় তুলসীপাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
৯। মাথা ব্যথা ভালো করতে পারে।এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথাব্যথা ভালো হবে।
১২। তুলসী পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, কোলেস্টেরল কমায় ।
১৩। পোকায় কামড় দিলে তুলসীর রস ব্যবহার করলে ব্যথা দূর হয়।
১৪। ডায়রিয়া হলে ১০ থেকে বারোটি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।
১৫। তুলসীর বীজ গায়ের চামড়াকে মসৃণ রাখে। বীজ সেবনে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে থাকে।
১৬। চোখের ক্ষতে এবং রাতকানা রোগে নিয়মিত তুলসীপাতার রস ড্রপ হিসেবে ব্যবহারে ফল পাওয়া যায়। দাঁতের সুরক্ষায় তুলসীপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো থাকে। এ ছাড়া সরিষার তেলের সাথে তুলসীপাতার গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজলেও দাঁত শক্ত থাকে। মুখের দুর্গন্ধ রোধে তুলসীপাতার মাজন ভালো ফল দিয়ে থাকে।
১৭। তুলসীর বীজ পানিতে ভিজালে পিচ্ছিল হয়। এই পানিতে চিনি মিশিয়ে শরবতের মত করে খেলে প্রস্রাবজনিত জ্বালা যন্ত্রনায় বিশেষ উপকার হয়। এছাড়াও তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন ।
১৮। মুখে বসন্তের কাল দাগে তুলসীর রস মাখলে ঐ দাগ মিলিয়ে যায়। হামের পর যে সব শিশুর শরীরে কালো দাগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস মাখলে গায়ে স্বাভাবিক রং ফিরে আসে।
১৯। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷
২০। ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান ৷
২১। কোন কারনে রক্ত দূষিত হলে কাল তুলসিপাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। শ্লেষ্মার জন্য নাক বন্ধ হয়ে কোনো গন্ধ পাওয়া না গেলে সে সময় শুষ্ক পাতা চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়। পাতাচূর্ণ দুই আঙ্গুলের চিমটি দিয়ে ধরে নাক দিয়ে টানতে হয়, সেটাই নস্যি।
২২। তুলসি পাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
২৩। যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
২৪। সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচী বাড়ে।
২৫। ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে ৷
ই
২৬। তুলসী মূল শুক্র গাঢ় কারক। তুলসী পাতার ক্বাথ, এলাচ গুঁড়া এবং এক তোলা পরিমাণ মিছরী পান করলে ধাতুপুষ্টি সাধিত হয় যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ইন্দ্রিয় উত্তেজক। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমাণ তুলসী গাছের শিকড় পানের সাথে খেলে যৌনদূর্বলতা রোগ সেরে যায়।
২৭। চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
২৮। শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।
২৯। চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।
৩০। পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান ৷ হাগু একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে!!! মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি!
৩১। মানবদেহের যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে তুলসীর পাতা অনন্য। এতে রয়েছে জীবাণুনাশক ও সংক্রমণ নাশক।
১। নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুণ আছে। তুলসি পাতা নার্ভ টনিক ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি কারী। এটা শ্বাস নালী থেকে সর্দি–কাশী দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম নিঃসৃত হতে সাহায্য করে।
২। জ্বর ভালো করে
তুলসীর জীবাণু নাশক, ছত্রাক নাশক ও ব্যাক্টেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার জ্বর পর্যন্ত ভালো করতে পারে তুলসী পাতা।
– আধা লিটার পানিতে কিছু তুলসী পাতা ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিন
– এক্ষেত্রে তুলসী ও এলাচ গুঁড়ার অনুপাত হবে ১:০.৩
– জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণটিকে অর্ধেক করে ফেলুন
– মিশ্রণটির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পর পর পান করুন
– এই মিশ্রণটি শিশুদের জন্য অনেক কার্যকরী।
বিভিন্ন প্রকার জ্বরে তুলসীপাতার রসের ব্যবহার অনেকটা শাস্ত্রীয় বিষয় হিসেবে পরিচিত। বিশেষত ঋতু পরিবর্তন হেতু যে জ্বর, ম্যালেরিয়া জ্বর এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে সমাজে। এর জন্য কচি তুলসীপাতা চায়ের সাথে সেদ্ধ করে পান করলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
*. একিউট জ্বরে তুলসীপাতার সেদ্ধ রসের সাথে এলাচিগুঁড়া এবং চিনি ও দুধ মিশিয়ে পান করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। গলক্ষতের জন্য তুলসীপাতা সেদ্ধ পানি পান করলে এবং গারগল করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
তুলসী পাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে ফুসফুসীয় সমস্যায়। ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি এবং ঠাণ্ডাজনিত রোগে তুলসী পাতার রস, মধু ও আদা মিশিয়ে পান করলে উপশম পাওয়া যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে তুলসী পাতার রস, লবণ ও লবঙ্গ মিশিয়ে পান করলে ফল পাওয়া যায়। এ ধরনের রোগের ব্যবহারের জন্য তুলসী পাতা আধা লিটার পানিতে সেদ্ধ করতে হয় ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষন তা অর্ধেকে পরিণত হয়।
৩। ডায়াবেটিস নিরাময় করে
তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল ও ক্যারিওফাইলিন উৎপন্ন করে। এই উপাদান গুলো অগ্নাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে( বিটা সেল ইনসুলিন জমা রাখে ও নিঃসৃত করে)। যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৪। কিডনি পাথর দূর করে
রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেলকে কমতে সাহায্য করে কিডনিকে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যাথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে।
৫। ক্যান্সার নিরাময় করে
তুলসীর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সার এর বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে। কারণ এর উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়। উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খান।
৬। তুলসীপাতার রস শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষত শিশুদের ঠাণ্ডা লাগা, জ্বর হওয়া, কাশি লাগা, ডায়রিয়া ও বমির জন্য তুলসীপাতার রস ভালো কাজ করে। জলবসন্তের পুঁজ শুকাতেও তুলসীপাতা ব্যবহৃত হয়।
৭। মানসিক চাপ কমায়: মানসিক চাপে অ্যান্টিস্ট্রেস এজেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ প্রশমনে এমনকি প্রতিরোধে তুলসী চমৎকার কাজ করে। কোনো সুস্থ ব্যক্তি যদি প্রতিদিন অন্তত ১২টি তুলসীপাতা দিনে দু’বার নিয়মিত চিবাতে পারেন তাহলে সেই ব্যক্তি কখনো মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হবেন না বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে তুলসি পাতা। স্নায়ু শিথিল করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ফ্রি রেডিকলকে নিয়ন্ত্রণ করে। অতিরিক্ত অবসাদ এবং মানসিক চাপ অনুভূত হলে ১০ থেকে ১২টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেয়ে নিন, উপকৃত হবেন।তুলসীর স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতা আছে। সুস্থ মানুষও প্রতিদিন ১২ টি তুলসী পাতা চিবালে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারবেন।
৮। মুখের ঘা দূর করতেঃ তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে। মুখের ঘা শুকাতেও তুলসীপাতা ভালো কাজ করে। মুখের ইনফেকশন দূর করতে তুলসীপাতা অতুলনীয়। প্রতিদিন কিছু পাতা (দিনে দুবার) নিয়মিত চিবালে মুখের সংক্রমণ রোধ করা যেতে পারে। চর্মরোগে তুলসীপাতার রস উপকারী। দাউদ এবং অন্যান্য চুলকানিতে তুলসীপাতার রস মালিশ করলে ফল পাওয়া যায়। ন্যাচার অ্যাথিতে শ্বেতীরোগের চিকিৎসায় তুলসীপাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
৯। মাথা ব্যথা ভালো করতে পারে।এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথাব্যথা ভালো হবে।
১২। তুলসী পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, কোলেস্টেরল কমায় ।
১৩। পোকায় কামড় দিলে তুলসীর রস ব্যবহার করলে ব্যথা দূর হয়।
১৪। ডায়রিয়া হলে ১০ থেকে বারোটি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।
১৫। তুলসীর বীজ গায়ের চামড়াকে মসৃণ রাখে। বীজ সেবনে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে থাকে।
১৬। চোখের ক্ষতে এবং রাতকানা রোগে নিয়মিত তুলসীপাতার রস ড্রপ হিসেবে ব্যবহারে ফল পাওয়া যায়। দাঁতের সুরক্ষায় তুলসীপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো থাকে। এ ছাড়া সরিষার তেলের সাথে তুলসীপাতার গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজলেও দাঁত শক্ত থাকে। মুখের দুর্গন্ধ রোধে তুলসীপাতার মাজন ভালো ফল দিয়ে থাকে।
১৭। তুলসীর বীজ পানিতে ভিজালে পিচ্ছিল হয়। এই পানিতে চিনি মিশিয়ে শরবতের মত করে খেলে প্রস্রাবজনিত জ্বালা যন্ত্রনায় বিশেষ উপকার হয়। এছাড়াও তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন ।
১৮। মুখে বসন্তের কাল দাগে তুলসীর রস মাখলে ঐ দাগ মিলিয়ে যায়। হামের পর যে সব শিশুর শরীরে কালো দাগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস মাখলে গায়ে স্বাভাবিক রং ফিরে আসে।
১৯। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷
২০। ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান ৷
২১। কোন কারনে রক্ত দূষিত হলে কাল তুলসিপাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। শ্লেষ্মার জন্য নাক বন্ধ হয়ে কোনো গন্ধ পাওয়া না গেলে সে সময় শুষ্ক পাতা চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়। পাতাচূর্ণ দুই আঙ্গুলের চিমটি দিয়ে ধরে নাক দিয়ে টানতে হয়, সেটাই নস্যি।
২২। তুলসি পাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
২৩। যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
২৪। সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচী বাড়ে।
২৫। ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে ৷
ই
২৬। তুলসী মূল শুক্র গাঢ় কারক। তুলসী পাতার ক্বাথ, এলাচ গুঁড়া এবং এক তোলা পরিমাণ মিছরী পান করলে ধাতুপুষ্টি সাধিত হয় যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ইন্দ্রিয় উত্তেজক। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমাণ তুলসী গাছের শিকড় পানের সাথে খেলে যৌনদূর্বলতা রোগ সেরে যায়।
২৭। চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
২৮। শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।
২৯। চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।
৩০। পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান ৷ হাগু একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে!!! মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি!
৩১। মানবদেহের যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে তুলসীর পাতা অনন্য। এতে রয়েছে জীবাণুনাশক ও সংক্রমণ নাশক।
সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯
সজিনা
সজিনা
সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড।
এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন A -এর এক বিশাল উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।
★ প্রতি গ্রাম সজনে পাতায়ঃ-
* একটি কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন c রয়েছে।
* দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ও দুই গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে।
* গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন a এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম বিদ্যমান।ফলে এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিন ঘাটতি জনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
★ এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রণ বিদ্যমান, যা এ্যানেমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
★ সজনে শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনেও অন্যতম অবদান রাখে।
★ মানুষের শরীরের প্রায় ২০% প্রোটিন যার গাঠনিক একক হলো এমাইনো এসিড। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কার্যাবলী পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে এমাইনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষের শরীরের যে ৯ টি এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়, তার সবগুলোই এই সাজনার মধ্যে বিদ্যমান।
★ এটি শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
★ নিয়মিত দৈনিক সেবন শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো শক্তিশালী করে এবং ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার দরুন এটি ‘এইডস’ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
★ এটি শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুষ্টিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
★ শরীরের ওজন কমাতেও ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
★ এটি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। পাতা থেকে তৈরি এক টেবিল চামচ পাউডারে ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% আয়রণ বিদ্যমান, যা ১ থেকে তিন বছরের শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোকালীন সময়ে ৬ টেবিল চামচ পাউডার একজন মায়ের প্রতিদিনের আয়রণ এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
★ এটির এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি যকৃত ও কিডনী সুস্থ্য রাখতে এবং রূপের সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবেও কাজ করে থাকে।
★ সাজনাতে প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান।
★ এতে ৩৬ টির মত এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া সজিনাতে প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্যপোযোগী পুষ্টি উপাদান সমুহঃ-
জ্বলীয় অংশ = ৮৩.৩ গ্রাম
খনিজ = ১.৯ গ্রাম
আঁশ = ৪.৮ গ্রাম
খাদ্যশক্তি = ৬০ কিলোক্যালোরি
প্রোটিন = ৩.২ গ্রাম
চর্বি = ০.১ গ্রাম
শর্করা = ১১.৪ গ্রাম
ক্যলশিয়াম = ২১.০ মিলিগ্রাম
লোহা = ৫.৩ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন = ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=সি = ৪৫.০ মিলিগ্রাম
বিঃদ্রঃ আমাদের লেখা নিয়মিত পেতে হলে অনুগ্রহকরে লেখাটি শেয়ার করবেন ও অবশ্যয় কমেন্ট করবেন ।
সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড।
এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন A -এর এক বিশাল উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।
★ প্রতি গ্রাম সজনে পাতায়ঃ-
* একটি কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন c রয়েছে।
* দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ও দুই গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে।
* গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন a এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম বিদ্যমান।ফলে এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিন ঘাটতি জনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
★ এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রণ বিদ্যমান, যা এ্যানেমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
★ সজনে শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনেও অন্যতম অবদান রাখে।
★ মানুষের শরীরের প্রায় ২০% প্রোটিন যার গাঠনিক একক হলো এমাইনো এসিড। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কার্যাবলী পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে এমাইনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষের শরীরের যে ৯ টি এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়, তার সবগুলোই এই সাজনার মধ্যে বিদ্যমান।
★ এটি শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
★ নিয়মিত দৈনিক সেবন শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো শক্তিশালী করে এবং ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার দরুন এটি ‘এইডস’ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
★ এটি শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুষ্টিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
★ শরীরের ওজন কমাতেও ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
★ এটি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। পাতা থেকে তৈরি এক টেবিল চামচ পাউডারে ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% আয়রণ বিদ্যমান, যা ১ থেকে তিন বছরের শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোকালীন সময়ে ৬ টেবিল চামচ পাউডার একজন মায়ের প্রতিদিনের আয়রণ এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
★ এটির এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি যকৃত ও কিডনী সুস্থ্য রাখতে এবং রূপের সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবেও কাজ করে থাকে।
★ সাজনাতে প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান।
★ এতে ৩৬ টির মত এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া সজিনাতে প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্যপোযোগী পুষ্টি উপাদান সমুহঃ-
জ্বলীয় অংশ = ৮৩.৩ গ্রাম
খনিজ = ১.৯ গ্রাম
আঁশ = ৪.৮ গ্রাম
খাদ্যশক্তি = ৬০ কিলোক্যালোরি
প্রোটিন = ৩.২ গ্রাম
চর্বি = ০.১ গ্রাম
শর্করা = ১১.৪ গ্রাম
ক্যলশিয়াম = ২১.০ মিলিগ্রাম
লোহা = ৫.৩ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন = ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=সি = ৪৫.০ মিলিগ্রাম
বিঃদ্রঃ আমাদের লেখা নিয়মিত পেতে হলে অনুগ্রহকরে লেখাটি শেয়ার করবেন ও অবশ্যয় কমেন্ট করবেন ।
শনিবার, ১৯ মে, ২০১৮
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়
আহলান সাহলান মাহে রামাদান!! সুস্বাগত হে মাহে রমজান!! রহমত বরকত মাগফেরাতের এই রমজানকে নিয়ে
মানুষ নানা ধরণের প্রস্তুতি নেন! এর পাশাপাশি যারা বিভিন্ন রোগে ভোগেন বিশেষ করে ডায়াবেটিস তারা আবার প্রস্তুতির পাশাপাশি চিন্তায়ও থাকেন কিভাবে রাখব রোজা??? রোজা রাখতে পারব তো???
তাদের জন্যই আজকের এই লেখা...
*রোজা রাখা::
আসলেই কি ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারেন?? হুম, ডায়াবেটিস রোগীরা একজন স্বাভাবিক মানুষের মতই রোজা রাখতে পারবেন অল্প কিছু রোগী ছাড়া!! তবে জানতে ও মানতে হবে কিছু অতিরিক্ত নিয়মকানন!!
বলে রাখা ভাল, রোজা ভয়ের কারণ নয় বরং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যম হতে পারে!!
*কারা রোজা নাও রাখতে পারেন??
যেসকল রোগীর গত ৩ মাসে হাইপো (৪ এর কম) বা হাইপার বা কিটোএসিডোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এসকল সমস্যা মাঝে মাঝেই দেখা যায় তাদের শরীর সায় না দিলে তারা রোজা নাও রাখতে পারেন...
*ঔষুধ কিভাবে খেতে হবে??
১. সকালের ওষুধ/ইনসুলিন ইফতারের সময় এবং রাতের ওষুধ/ইনসুলিন সেহরিতে খেতে/নিতে হবে...
২. সাধারণত সকল ট্যাবলেট জাতীয় ওষুধ আগের নিয়মেই চলবে!! কিন্তু যারা Glimepride (Dimerol 80) বা Glibenclamide ( Dibenol 5) এ গ্রুপের ওষুধ খান তারা এই ওষুধ পূর্বের নিয়মের অর্ধেক খাবেন! Metformin ( Oramet/ Metfo) সহ অন্যান্য সকল ওষুধ আগের ডোজেই চলবে!!
৩. যারা দিনে ১ বার ইনসুলিন নেন তারা পুর্বের নিয়মে রাত ৯ টায় ইনসুলিন নিবেন কিন্তু ডায়াববেটিসের মাত্রা অনুযায়ী পুর্বের ডোজের চেয়ে ২০-৩০% কম নিবেন!!
যেমন, ধরেন আগে যদি ১০ ইউনিট নিত, এখন নিবে ৭ বা ৮ ইউনিট!!
৪. যারা দিনে ২/৩ বার ইনসুলিন নিতেন এখন নিবেন ২ বার! এক্ষেত্রে সকালের ডোজ পুর্বের নিয়মে সন্ধ্যায় নিবেন! পানি দিয়ে ইফতারি ভেঙে ইনসুলিন নিতে হবে!! ইনসুলিন নিয়েই ইফতারি শেষ করতে হবে! এরপর নামাজ পড়তে যাবেন!! মনে রাখতে হবে ইফতারি শেষ না করেই তাড়াহুড়ো করে নামাজ ধরার জন্য মসজিদে যাওয়া যাবে না!! প্রয়োজনে বাসায় নামাজ পড়বেন কিন্তু ইফতারি আগে শেষ করতে হবে নতুবা হাইপো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে!
আবার, রাতের ডোজ সেহরিতে নিতে হবে!! তবে এক্ষেত্রে রোজার পূর্বে যত ইউনিট নিত পুরো রোজার মাসে নিবে তার অর্ধেক!! অর্থাৎ আগে যদি কেউ ১২ ইউনিট নিত এখন নিবে ঠিক তার অর্ধেক বা ৬ ইউনিট!!
*রোজা রাখা অবস্থায় খারাপ লাগলে কি করতে হবে??
যারা Type -1 ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসের সাথে হ্নদরোগ, কিডনী বা লিভার সমস্যায় ভুগছেন তারা সকাল ও বিকেলে ডায়াবেটিস গ্লুকোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করবেন! রোজা রাখা অবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়!! তাছাড়া খারাপ লাগলেও যেকোন সময় পরীক্ষা করা যায়!
যদি ডায়াবেটিস ৪ এর কম হয় তাহলে এটা হাইপো! সেক্ষেত্রে অতি দ্রুত ১৫ গ্রাম বা ৩ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি খেয়ে ফেলতে হবে! যদি পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকে সেক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, শরীর অতিরিক্ত ঘামা, প্রচুর ক্ষুধা লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদি সমস্যা হলেই রোজা ভাঙতে হবে!
এজন্য সুবিধার জন্য ৩ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি সব সময় সাথেই রাখতে হবে!!!
আবার ডায়াবেটিস যদি ১৬ র বেশি হয় সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১ ডোজ ইনসুলিন নিতে হবে! ডায়াবেটিস রাখা অবস্থায় ইনসুলিন নেওয়া যাবে! তবে কত ইউনিট ইনসুলিন নিতে হবে ইহা ডাক্তারের সহিত পরামর্শ করে নিতে হবে! এ সংক্রান্ত একটি স্বীকৃত ফতোয়া আছে বাইতুল মোকাররমের শরীয়াহ বোর্ডের!! তবে কিটো এসিডোসিস বা পানি শুন্যতা হলে রোজা ভাংতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে!
*কি খাবেন??
খাবারের জন্য ডায়াবেটিস বইয়ের খাদ্য তালিকা অনুসরণ করবেন তবে আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি ও অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় সকল খাদ্য পরিমাণে কম খাবেন! ইফতারি করার সময় পানি, লেবুর শরবত বা ডাবের পানি ব্যবহার করবেন! খেজুর খাওয়া যাবে!!
*ব্যায়াম কি করব?
যারা তারাবীর নামাজ পড়বেন তাদের জন্য আর অতিরিক্ত ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই! তবে চাইলে তারাবীর পর বা রাতের খাবারের পর হালকা হাটাহাটি করতে পারেন! তবে দিনের বেলায় ভুলেও ব্যায়াম করা যাবে না, এতে হাইপো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে!
শেষ কথা:
সঠিক নিয়ম কানন জানুন, অপরকে জানান! সঠিক নিয়ম পদ্ধতি জেনে সুস্থ ভাবে রোজা রাখুন কিন্তু অহেতুক ভয়ে রোজা ভঙ্গ করবেন না!
ওয়াই টি ডায়াকন (কুরছ জিয়াবিত)
১টা করে ২ বার খেতে পারেন খাবার পর। এটি সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
মূল্য ২০০/- মাত্র।
বি:দ্র: শর্করা জাতীয় খাবার নিষেধ।
@ ডাঃ মোঃ আব্দুস শুকুর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি
আহলান সাহলান মাহে রামাদান!! সুস্বাগত হে মাহে রমজান!! রহমত বরকত মাগফেরাতের এই রমজানকে নিয়ে
মানুষ নানা ধরণের প্রস্তুতি নেন! এর পাশাপাশি যারা বিভিন্ন রোগে ভোগেন বিশেষ করে ডায়াবেটিস তারা আবার প্রস্তুতির পাশাপাশি চিন্তায়ও থাকেন কিভাবে রাখব রোজা??? রোজা রাখতে পারব তো???
তাদের জন্যই আজকের এই লেখা...
*রোজা রাখা::
আসলেই কি ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারেন?? হুম, ডায়াবেটিস রোগীরা একজন স্বাভাবিক মানুষের মতই রোজা রাখতে পারবেন অল্প কিছু রোগী ছাড়া!! তবে জানতে ও মানতে হবে কিছু অতিরিক্ত নিয়মকানন!!
বলে রাখা ভাল, রোজা ভয়ের কারণ নয় বরং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যম হতে পারে!!
*কারা রোজা নাও রাখতে পারেন??
যেসকল রোগীর গত ৩ মাসে হাইপো (৪ এর কম) বা হাইপার বা কিটোএসিডোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এসকল সমস্যা মাঝে মাঝেই দেখা যায় তাদের শরীর সায় না দিলে তারা রোজা নাও রাখতে পারেন...
*ঔষুধ কিভাবে খেতে হবে??
১. সকালের ওষুধ/ইনসুলিন ইফতারের সময় এবং রাতের ওষুধ/ইনসুলিন সেহরিতে খেতে/নিতে হবে...
২. সাধারণত সকল ট্যাবলেট জাতীয় ওষুধ আগের নিয়মেই চলবে!! কিন্তু যারা Glimepride (Dimerol 80) বা Glibenclamide ( Dibenol 5) এ গ্রুপের ওষুধ খান তারা এই ওষুধ পূর্বের নিয়মের অর্ধেক খাবেন! Metformin ( Oramet/ Metfo) সহ অন্যান্য সকল ওষুধ আগের ডোজেই চলবে!!
৩. যারা দিনে ১ বার ইনসুলিন নেন তারা পুর্বের নিয়মে রাত ৯ টায় ইনসুলিন নিবেন কিন্তু ডায়াববেটিসের মাত্রা অনুযায়ী পুর্বের ডোজের চেয়ে ২০-৩০% কম নিবেন!!
যেমন, ধরেন আগে যদি ১০ ইউনিট নিত, এখন নিবে ৭ বা ৮ ইউনিট!!
৪. যারা দিনে ২/৩ বার ইনসুলিন নিতেন এখন নিবেন ২ বার! এক্ষেত্রে সকালের ডোজ পুর্বের নিয়মে সন্ধ্যায় নিবেন! পানি দিয়ে ইফতারি ভেঙে ইনসুলিন নিতে হবে!! ইনসুলিন নিয়েই ইফতারি শেষ করতে হবে! এরপর নামাজ পড়তে যাবেন!! মনে রাখতে হবে ইফতারি শেষ না করেই তাড়াহুড়ো করে নামাজ ধরার জন্য মসজিদে যাওয়া যাবে না!! প্রয়োজনে বাসায় নামাজ পড়বেন কিন্তু ইফতারি আগে শেষ করতে হবে নতুবা হাইপো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে!
আবার, রাতের ডোজ সেহরিতে নিতে হবে!! তবে এক্ষেত্রে রোজার পূর্বে যত ইউনিট নিত পুরো রোজার মাসে নিবে তার অর্ধেক!! অর্থাৎ আগে যদি কেউ ১২ ইউনিট নিত এখন নিবে ঠিক তার অর্ধেক বা ৬ ইউনিট!!
*রোজা রাখা অবস্থায় খারাপ লাগলে কি করতে হবে??
যারা Type -1 ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসের সাথে হ্নদরোগ, কিডনী বা লিভার সমস্যায় ভুগছেন তারা সকাল ও বিকেলে ডায়াবেটিস গ্লুকোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করবেন! রোজা রাখা অবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়!! তাছাড়া খারাপ লাগলেও যেকোন সময় পরীক্ষা করা যায়!
যদি ডায়াবেটিস ৪ এর কম হয় তাহলে এটা হাইপো! সেক্ষেত্রে অতি দ্রুত ১৫ গ্রাম বা ৩ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি খেয়ে ফেলতে হবে! যদি পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকে সেক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, শরীর অতিরিক্ত ঘামা, প্রচুর ক্ষুধা লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদি সমস্যা হলেই রোজা ভাঙতে হবে!
এজন্য সুবিধার জন্য ৩ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি সব সময় সাথেই রাখতে হবে!!!
আবার ডায়াবেটিস যদি ১৬ র বেশি হয় সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১ ডোজ ইনসুলিন নিতে হবে! ডায়াবেটিস রাখা অবস্থায় ইনসুলিন নেওয়া যাবে! তবে কত ইউনিট ইনসুলিন নিতে হবে ইহা ডাক্তারের সহিত পরামর্শ করে নিতে হবে! এ সংক্রান্ত একটি স্বীকৃত ফতোয়া আছে বাইতুল মোকাররমের শরীয়াহ বোর্ডের!! তবে কিটো এসিডোসিস বা পানি শুন্যতা হলে রোজা ভাংতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে!
*কি খাবেন??
খাবারের জন্য ডায়াবেটিস বইয়ের খাদ্য তালিকা অনুসরণ করবেন তবে আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি ও অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় সকল খাদ্য পরিমাণে কম খাবেন! ইফতারি করার সময় পানি, লেবুর শরবত বা ডাবের পানি ব্যবহার করবেন! খেজুর খাওয়া যাবে!!
*ব্যায়াম কি করব?
যারা তারাবীর নামাজ পড়বেন তাদের জন্য আর অতিরিক্ত ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই! তবে চাইলে তারাবীর পর বা রাতের খাবারের পর হালকা হাটাহাটি করতে পারেন! তবে দিনের বেলায় ভুলেও ব্যায়াম করা যাবে না, এতে হাইপো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে!
শেষ কথা:
সঠিক নিয়ম কানন জানুন, অপরকে জানান! সঠিক নিয়ম পদ্ধতি জেনে সুস্থ ভাবে রোজা রাখুন কিন্তু অহেতুক ভয়ে রোজা ভঙ্গ করবেন না!
ওয়াই টি ডায়াকন (কুরছ জিয়াবিত)
১টা করে ২ বার খেতে পারেন খাবার পর। এটি সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
মূল্য ২০০/- মাত্র।
বি:দ্র: শর্করা জাতীয় খাবার নিষেধ।
@ ডাঃ মোঃ আব্দুস শুকুর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি
রবিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৮
খালি পেটে যে সকল ঔষধ খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর
খালি পেটে যে সকল ঔষধ খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর
ঔষধ আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের সবাইকেই কোন না কোন সময় ঔষধ খেতে হয়। প্রত্যেক ঔষধ খাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। কোন ঔষধ খালি পেটে খেতে হয় আবার কোন ঔষধ খালি পেটে খাওয়া নিষিদ্ধ।
এখানে দেখুন কোন কোন ঔষধ খালি পেটে খাওয়া নিষেধ এবং খেলে কি কি ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে।
এনেসআইডস (যেমন- ডাইক্লোফেন, ভল্টালিন, রোলাক, ন্যাপ্রোক্স ইত্যাদি) ব্যথায় ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ পেটের জ্বালা-পোড়া সহ গ্যাস্ট্রিক, আলসার এমনকি পাকস্থালী ফুটো করে ফেলতে পারে। তাই এইসব ব্যথার ওষুধ অবশ্যই ভরা পেটে খেতে হবে এবং আগে অমিটিডিন বা রেনেটিডিন জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।
(নোটঃ প্যারাসিট্যামল যেমেন-নাপা, এইস এনেসআইডস হলেও এদের আগে অমিটিডিন বা রেনেটিডিন খাওয়ার প্রয়োজন পড়েনা, এমনকি ভরা পেটে না খেলেও তেমন অসুবিধা হয়না। তবে ভরা পেটে খাওয়া ভাল। আরেকটি এনেসআইডস ‘অ্যাসপিরিন’ যেমন- ইকোস্পিরিন/কারভার আগে অমিটিডিন বা রেনেটিডিন খাওয়ার প্রয়োজন পড়েনা, শুধু ভরা পেটে খেলেই হয়।)
এসব ওষুধ (যেমন- ট্রামাল/অ্যানাডল, মরফিন) এনেসআইডসের মত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা না করলেও বমি বা বমি-বমি ভাবের সমস্যা করে যা ভরা পেটে খেলে কম হয়।
তা ছাড়া এসব ঔষধ কোষ্ঠকাঠিন্য এর সৃষ্টি করতে পারে যা ফাইবার যুক্ত খাবার (যেমন- শাঁক, শসা) খেলে একেবারে হয়না বললেই চলে।
স্টেরয়েড (যেমন- কটশন/কর্টান) অ্যাজমা, বাত-ব্যথা, অ্যালার্জি, সহ বিভিন্ন রোগে ব্যবহার করা হয়। স্টেরয়েড গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা করে, এমনকি গ্যাস্টিক আলসার করতে পারে। তাই এসব ওষুধ অবশ্যই খাবারের পরে খেতে হবে।
মেটফরমিন ডায়াবেটিসের অতি কার্যকরী একটি ওষুধ। মেটফরমিন (যেমন- কমেট/মেটফো) বা মেটফরমিন যুক্ত ওষুধ (যেমন- গ্ল্যাল্ভাস-মেট/গ্লিপিটা-এম) খাবারের সাথে বা খাবারের পরে খেতে হবে। না হলে বমি বা বমি-বমি ভাব অথবা ডায়রিয়া হতে পারে।
অ্যান্টাসিড পাকস্থলীর অতিরিক্ত এসিডকে প্রশমন করে কাজ করে। পাকস্থলীর এসিড খাবারের পর ক্ষরিত হয়। তাই এ জাতীয় ওষুধ খাবারের আধা থেকে এক ঘণ্টা পরে খাওয়া উচিত। তবে রাতের বেলা বুক-জ্বালা পোড়া (গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা) করলে খাবার ছাড়াও অ্যান্টাসিড খাওয়া যায়।
খালি পেটে জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী বড়ি বমি-বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে এমনকি বমিও হতে পারে। তাই জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী পিল অবশ্যই খাবারের পরে খাওয়া উচিত।
অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন- সেফুর, সেফ-৩, অ্যাজিথ/জিম্যক্স, মক্সাসিল ইত্যাদি) খাওয়ার পরে অনেকেই বমি-বমি ভাবে আক্রান্ত হন। ক্ষেত্র বিশেষে বমি বা ডাইরিয়াও হতে পারে। খাওয়ার পর অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে অনেক সময়ে এই সমস্যাটা দূর হয়।