ইংরেজিতে: কিডনি
বৃক্ক দেহের রেচনতন্ত্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে এক জোড়া বৃক্ক থাকে। মানুষের দেহের বৃক্কের গড়ন অনেকটা শিমের মতো। এই অঙ্গ দুটি উদরের পিছনের দিকে থাকে। বৃক্ক মূূূত্র উৎপাদন করে এবং সেই সাথে শরীরের জল ও ইলেকট্রলাইট (সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ইত্যাদি) এর ভারসাম্য বজায় রাখে।
দেহের পেছনদিকে বক্ষপিঞ্জরের নিচে মেরুদণ্ডের দুই পাশে একটি করে দুইটি বৃক্ক থাকে। বৃক্কদ্বয় ডর্সাল অ্যাওর্টার সাথে সংযুক্ত থাকে। মানুষের প্রত্যেকটি বৃক্কের রঙ লালচে, কিছুটা চাপা, অনেকটা শিমের বীজের মতো। ডান বৃক্কটি বাম বৃক্ক অপেক্ষা খানিকটা নিচে অবস্থিত। বৃক্কের ভেতরের দিকটি অবতল এবং বাইরের দিকটি উত্তল। অবতল অংশে হাইলাস নামক অনেকগুলো ভাজ দেখা যায়। এর ভেতর দিয়ে রেনাল শিরা ও ইউরেটর বহির্গত হয়। আবার, রেনাল ধমনী ও স্নায়ু এর মাধ্যমেই বৃক্কে প্রবেশ করে। সমগ্র বৃক্ক যোজক কলা নির্মিত ক্যাপস্যুলের ভিতরে থাকে । একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যাক্তির বৃক্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০-১২সে.মি. , প্রস্থ ৫-৬ সে.মি. ও স্থূলত্ব প্রায় ৩ সে.মি.। পূর্ণবয়স্ক পুরুষের বৃক্কের ওজন প্রায় ১৫০-১৭০গ্রাম এবং পূর্ণবয়স্ক মহিলার বৃক্কের ওজন প্রায় ১৩০-১৫০গ্রাম।
বৃক্কের লম্বচ্ছেদ করা হলে সুস্পষ্ট দুটি অংশ দেখা যায়। এগুলো হল, কর্টেক্স ও মেডুলা। কর্টেক্স বৃক্কের ক্যাপস্যুলের সাথে সংযুক্ত এবং মেডুলাকে বৃক্কের অভ্যন্তরে দেখা যায়। নেফ্রনের ফমালপিজিয়ান কণিকা, প্রক্সিমান নালিকা, ডিস্টাল নালিকা ও রক্তবাহিকা বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থান করে। অপরদিকে নেফ্রনের বাকি অংশ, যেমন— লুপ অব হেনলি, সংগ্রাহী নালিকা, রক্তবাহিকাগুলো মেডুলায় দেখা যায়। উক্ত অংশগুলো সম্মিলিতভাবে রেনাল পিরামিড গঠন করে। এভাবে অনেকগুলো রেনাল পিরামিড গঠিত হয়। পিরামিডের চূড়াকে বলা হয় প্যাপিলা(papilla)।
নেফ্রন ইংরেজি nephron।
বৃক্কের অভ্যন্তরে প্রায় ১০ লক্ষ নেফ্রন থাকে। এগুলো প্রায় ৩ সে.মি লম্বা। বৃক্কে থাকা নেফ্রনের নালিকাগুলো জোড়া দিলে তার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৬ কি.মি. লম্বা হবে। বৃক্কে থাকা নেফ্রনের অবিরত কাজের ফলে প্রতি মিনিটে প্রায় ১২৫ ঘন সে.মি. তরল রক্ত পরিশ্রুত হয়। এর ৯৯% পানিই বিশোধিত হয়ে রক্তে ফিরা যায়। প্রতি ঘন সে.মি. মূত্র সৃষ্টি হতে সময় লাগে প্রায় ১মিনিট।
বৃক্কের গ্লোমেরুলাস-এর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহকালে রক্ত থেকে গ্লুকোজ, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, লবণ, পানি ইত্যাদি ক্যাপসুলে প্রবেশ করে। বৃক্কীয় নালিকা অতিক্রম করার সময় প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ, পানি, লবণ ইত্যাদি পুনরায় শোষিত হয় এবং অবশিষ্টাংশ মূত্র হিসেবে বের হয়।
নেফ্রনকে ২ ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা—
১. রেনাল করপাসল বা মালপিজিয়ান বডি
২. রেনাল টিউব্যুল
১. রেনাল করপাসল (Renal Corpuscle) : নেফ্রনের অগ্রপ্রান্তকে বলা হয় রেনাল করপাসল। এটি বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থিত। রেনাল করপাসল ২টি অংশে বিভক্ত। ভাগ দুটি হলো— রেনাল ক্যাপস্যুল ও গ্লোমেরুলাস | ||
১.১. রেনাল ক্যাপস্যুল (Renal Capsule) : রেনাল করপাসলে অবস্থিত গ্লোমেরুলার কৈশিক জালিকগুচ্ছকে ঘিরে থাকে। এগুলো আইশাকার এপিথেলিয়াম দ্বারা গঠিত। এর আকার দ্বিস্তরী পেয়ালার মতো। এই অংশকে রেনাল ক্যাপস্যুল বলা হয়। এতে গ্লোমেরুলাস সংলগ্ন অংশকে বলা হয় ভিসেরাল স্তর। এটি পোডোসাইট নামক প্রবর্ধনযুক্ত কোষ দ্বারা তৈরী। বহিঃপ্রাচীরকে প্যারাইটাল স্তর বলে। প্যারাইটাল স্তরটি আইশাকার এপিথেলিয়াল কোষ দ্বারা আবৃত। ভিসেরাল স্তর ও প্যারাইটাল স্তরে মধ্যবর্তী স্থানকে বলা হয় ক্যাপস্যুলার স্পেস। | ||
১.২. গ্লোমেরুলাস (Glomerulus) : গ্লোমেরুলাস রেনাল ক্যাপস্যুলে প্রায় আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। এটি অ্যাফারেন্ট ধমনী থেকে কৈশিক জালিকাকারে গ্লোমেরুলাস সৃষ্টি হয়। একটি গ্লোমারুলাসে প্রায় ৫০ টি কৈশিকজালিকা দেখা যায়। জালিকাগুলোর প্রাচীর অর্থাৎ এন্ডোথেলিয়াম খুব পাতলা। এতে অসংখ্য ছিদ্র দেখা যায়।একটি ভিত্তিঝিল্লির উপর জালিকার সমস্ত এপিথেলিয়াম কোষ অবস্থিত। উৎপন্ন কৈশিকজালিকাগুলো মিলে গিয়ে ইফারেন্ট ধমনী সৃষ্টি করে ক্যাপস্যুল থেকে বেরিয়ে আসে। ইফারেন্ট ধমনী ও কৈশিকজালিকার ব্যাস অ্যাফারেন্ট ধমনীর ব্যাস অপেক্ষা বেশি। | ||
২. রেনাল টিউব্যুল (Renal Tubule) : রেনাল ক্যাপস্যুলের অঙ্কীয়দেশ থেকে শুরু হয়ে সংগ্রাহক নালিকা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ৩ সে.মি. লম্বা ও ২০ থেকে ৬০ মাইক্রন চওড়া নালিকাকে রেনাল টিউব্যুল বলে। দুটি বৃক্কে মোট প্রায় ২৪ লক্ষ রেনাল টিউব্যুল দেখা যায়, যেগুলোকে জোড়া দিলে দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭২ কি.মি. বা ৪৫ মাইল। প্রত্যেকটি রেনাল টিউব্যুলে ৪টি অংশ দেখা যায়। এই অংশগুলো হলো— প্রক্সিমান প্যাচানো নালিকা, লুপ অব হেনলি, ডিস্টাল প্যাচানো নালিকা ও সংগ্রাহী নালিকা। | ||
২.১. প্রক্সিমাল প্যাচানো নালিকা (Proximal Convoluted tubule): এটি নেফ্রনের বৃহত্তম অংশ। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ মি.মি. ও প্রস্থ প্রায় ৬০ মাইক্রো মি.। এর প্রাচীর একস্তরী ঘনতলীয় কোষে গঠিত। নালিকা গহ্বর সংলগ্ন কোষপ্রান্ত অসংখ্য মাইক্রোভিলাই থাকে। নালিকার অন্যা প্রান্ত ভিত্তিঝিল্লীর উপর থাকে। ভেতরের দিকটি ভাজ হয়ে চ্যানেল তৈরি করে। ২.২. লুপ অব হেনলি (Loop of Henle) : লুপ অব হেনলি প্রক্সিমাল প্যাচানো নালিকার শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে সোজা নিম্নগামী হয়ে মেডুলায় প্রবেশ করে। অতঃপর U আকৃতির লুপ তৈরি করে প্রান্তীয় প্যাচানো নালিকায় শেষ হয়। এতে ৩টি অংশ দেখা যায়। এগুলো হল, নিম্নগামী বাহু, পাতলা উর্ধ্বগামী বাহু ও স্থূল উর্ধ্বগামী বাহু। নিম্নগামী বাহু আইশাকার কোষ দ্বারা গঠিত। পাতলা উর্ধ্বগামী বাহুতে আইশাকার পাতলা প্রাচীর দেখা যায়। স্থুল উর্ধ্বগামী বাহুতে ঘনতলীয় কোষের প্রাচীর দেখা যায়। ২.৩. ডিস্টাল প্যাচানো নালিকা (Distal Convoluted tubule): লুপ অব হেনলির স্থূল উর্ধ্বগামী বাহুর পরবর্তী অংশ হল ডিদ্টাল প্যাচানো নালিকা। এর সাথে অ্যাফারেন্ট ধমনীর সংযোগ থাকে। এখানে উভয়ের উভয়ের কোষগুলো ক্ষরণকারী কোষে পরিবর্তিত হয়ে জাক্সটাগ্লোমেরুলার কমপ্লেক্স গঠন করে। ২.৪. সংগ্রাহী নালী (Collecting duct) : এটি ডিস্টাল নালিকার পরবর্তী অংশ। এটি নেফ্রনেরও সর্বশেষ অংশ। এর কিছু অংশ কর্টেক্সে আর বাকীটুকু মেডুলায় দেখা যায়। এটি সোজা ও ঘনতলীয় কোষে গঠিত। কয়েকটি সংগ্রাহী নালী একত্রিত হয়ে স্তম্ভাকার বেলিনির নালী গঠন করে। বেলিনির নালী পেলভিসে রেনাল পিরামিডে প্যাপিলার ছিদ্রপথে উন্মুক্ত হয়। |
১. রক্তে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য ঠিক রাখা
২. পানির ভারসাম্য রক্ষা করা
৩. লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা
৪. রক্ত হতে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করা
৫. ভিটামিন ডি তৈরি করা
৬. মূূূত্র উৎপাদন এবং নির্গত করার কার্যক্রম সম্পন্ন করা।
আর বৃক্ক বা কিডনি ভাল রাখতে খেতে পারেন ১০০% নিরাপদ রেনাল (শরবতে বুয়ুরী)
সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০০/ টাকা মাত্র।
বিঃদ্রঃ বাংলাদেশ একমাত্র ইউনানি ফুর্মূলা অনুযায়ী রেনাল বা শরবত বুয়ুরী তৈরি করে ইয়থ ল্যাবরেটরিজ ইউনানি লি:। আর অনলাইনে বিক্রয় করছে হেলথ হারবাল বিডি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন