যা জানা থাকা প্রয়োজন
**নাক থেকে বক্ষপিন্জরের অভ্যমতরের ফুসফুসের (বেলুন এর ন্যায় সংকোচন ও প্রসারনশীণ শরীরের একটি যন্ত্র) নিম্নতম অংশ পয্যমত হচেছ শ্বাসতমত্র। ইহার সাথে কান ও চোখের সরাসরি যোগাযোগ রহিয়াছে।
** নাক দিয়ে নিশ্বাসের সাথে বাতাস প্রবেশ করার পর শ্বাস নালীর বিভিন্ন অংশ পার হয়ে বাতাস ফুসফুসের নিচের অংশে যায় এবং ঐসব অংশ থেকে শরীরের দূষিত গ্যাস শ্বাস নালীর বিভিন্ন অংশ পার হয়ে নাক দিয়ে বের হয়ে আসে।
** এই শ্বাসযমেত্রর ভেতরের পূরোটাই একটা আবরনি দ্বারা আচছাদিতযাকে শ্বাসযমেত্রর ঝিলিব আবরনি বলা হয়।
** এই শ্বাসযমেত্রর নিম্ন ভাগের ঝিলিব আবরনি খুবই সুক্ষ ও সরু এবং আনুবিক্ষনিক শ্বসন ছাকুনি এবং এর মাধ্যমেই শরীরের রক্তে তথা লোহিত কনিকায় বাইরের বাতাসের অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং শরীরের দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ অন্যান্য গ্যাসিয় দুষিত পদার্থ নির্গত হয়।
** এই ঝিলিব আবরনি অত্যন্ত সংবেদনশীল; এবং তাই তাতে শরীরের সাথে পরিচিত ও গ্যাসীয় পদার্থ ছাড়া অন্য কোন শরীরের সাথে সামন্জস্যহীন বা অপরিচিত পদার্থ সংস্পর্শে আস্লেই
1. এই ঝিল্লি আবরনিতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়,
2. এই প্রদাহের ফলে প্রতিরর্ক্ষাথে ঝিল্লি আবরনি থেকে ঝিলিব রস বের হয় (নাকে পানি সর্দি, কফ)।
3. নাকে প্রদাহজনিত সুরসুরির কানে পূনপুন হাঁচি হয় এবং একইকিারনে এবং এই নিঃসরন শরীর থেকে বের করে দেয়ার নিমিত্তে কাশীর সৃষ্টি হয়।
4. ঝিল্লি আবরনির প্রদাহের কারনে তা ফুলে যায়; ফলে এবং উপরিস্থিত ঝিল্লি রসের প্রলেপ এর কারনে শ্বাসনালীর বায়ুপথ সরু বা চিকন হয়ে যায়। ফলে শ্বাস নালীতে বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্থতার সৃষ্টি হয়, ফলে হাপাণীর মতো অবস্থা হয়. ফলে শ^াস নেয়ার সময় সোঁ সোঁ বা ফোঁসফোঁস শব্দ হয়।
5. এই ঝিল্লিরস নিঃসরন যখন বেশীপরিমানে হয় এবং কাশি দিয়ে বের করা যায় না অথবা বহুবিধ কারনে যখন শ্বাাসযন্ত্রের কাশী দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়; এই ঝিল্লিরস ফুসফুসের নিচের বায়ূ থলিতে (ফুসফুসের আলভিওলাইগুলো) জমা হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জীবানু সংক্রমন হয় যার ফলে ফুসফুসের ঝিল্লি আবরনী সহ ফুসফুসের নিম্নংাশে এই ব্যাকটেরিয়া জীবানু সংক্রমনে প্রদাহ হয়। (নিউমোনিয়া বা এআরআই)।
6. যেহেতু বায়ুথলিতে ব্যাকটেরিয়া জাতিয় জীবানু সংক্রমিত ঝিল্লি রসে পূর্ন থাকে সেহেতু বাইরের অক্সিজেন শরীরের রক্তে এবং রক্তের দুষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাইরে আসতে পারে না। ফলে
ক. তখন শ^াসের সময় জলীয় বুদ্বুদ্ ( Creps) শব্দ হয়।
L. রক্তের অক্সিজেন কমতির এই অবস্খায় শরীরের রেচন প্রক্রিয়ার কারনে রক্তে্ অম্লাধিক্য (Acidosis) দেখা দেয়।
M. এই অক্সিজেন ঘাটতি ও অম্লাধিক্য ঠিক করার নিমিত্তে ব্রেইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে শরীর তার স্বাভাবিক নিয়মেই অটোমেটিক ভাবে শ্রাসের গতি বাড়িয়ে দেয়।
N. ফলে খাওয়ার বা কান্নার সময় বারবার কাশী উঠে ও বমি হয় পূনঃপূনঃ।
O. ফুসফুসের ঝিল্লি থলির জীবানূ শরীরের রক্তে প্রবেশ করে রক্তকে ও সংক্রমিত করে (সেপ্টিসেমিয়া)।
৭. এই বহুবিধ কারনে রোগী দ্রুত মৃত্যু মুখে পতিত হয়।
উপরের আলোচনা হতে ইহা বোধগম্য যে যেহেতু শিশুদের শ^াসনালী সংকীর্ন ও সরু সেহেতু শ্বাসযন্ত্রের রোগ থেকে শিশুদের মধ্যে সহসা এবং সহজেই জটিলতা হতে পারে। সুতরাং শিশুদের শ^াসযনেন্ত্রর অসুন্থতার ত্বরিৎ যথাযত ব্যবস্থাপনা করা প্রয়োজন।
শ্বাস তন্ত্রের অসুস্থতার প্রধান উপসর্গ ও লক্ষন সমূহ
1. হাঁচি, সর্দি, কাশি, কফ,
2. দ্রুতশ্বাস ও হাপানি (প্রয়োজন মতো নিশ্বাস নিতে না পারা ও প্রশ্বাস ফেলতে না পারা, শ্বাসে শব্দ ও কষ্ট),
3. নিশ্বাসের সময় বুক চেপে যাওয়া,
4. খেতে গেলে শিশুদের কাশি উঠে বমি করা।
5. কফে রক্ত,
6. বুকব্যাথা,
7. কানে পুঁজ ও
8. মাথাকাম্ড়ি।
সাধারন ঠান্ডি ও সর্দি ---তে
কি হয় এবং কের্ন
01. নাক ও নাকাভ্যন্তরের প্রকোষ্ঠ গুলোর ঝিলবীর প্রদাহের ফলে ঝিলিব হতে ঝিলিবরস পানির আকারে ( সর্দি) বের হতে থাকে;
02. নাকের ভেতর অস্বস্থিকর সুরসুরি বোধ এবং এ থেকে বার বার হাঁচি হয়।
03. সাথে প্রদাহজনিত জ্বর, শরীরে ম্যজ ম্যজ ব্যাথাবোধ এবং গলার ভেতর খুসখুস বোধ এবং তাতে বারবার কাশি উঠা।
04. মাথার সামনের অংশে এবং মুখমন্ডলের উপরের অংশে কামড়ি।
05. খবর নিলে দেখা যাবে রোগীর পরিবারে বা প্রতিবেশে একই রোগী একই সময়ে আরো আছে।
এই প্রদাহ সাধারনতঃ ভাইরাস জনিত কারনে হয়ে থাকে। (শরীরের এলার্জি জাতীয় সংবেদনশীলতার কারনে ও নাক দিয়ে পানি ঝরতে পারে, তাও বছরের বিভিন্ন ঋৃতুতে বেশী হয়)। এছাড়াও সর্দি বা নাক থেকে পানি ঝরা উপসর্গ সহ ইন্ফ্লুয়েন্জা এবং হামের জ্বর ও শুরু হতে পারে। সাধারন ঠান্ডির সর্দির জ্বর ও কাশি সহ দেখা দেয় (তাই স্থানীয় ভাষায় বলা হয়- ঠান্ডি জ্বর। যেহেতু নাকের ঝিল্লি চোখের আবরণীর সাথে সরাসরি সংযোগ রহিয়াছে সেহেতু অনেক সময় আবার চোখের আবরনির প্রদাহের কারনে চোখ ও লাল দেখা দেয়।
নাকে পানি ঝরে এরুপ রোগগুলোর আপেক্ষিক আলোচনা
(এলার্জি জনিত বারন ছাড়া)
বৈশিষ্ঠ সমুহ
|
সাধারন ঠান্ডি
|
ইন্ফ্লুয়েন্জা
|
হাম জ্বরের (লুতির পুর্বে)
|
কখন বেশী হয়?
|
মে থেকে সেপ্টেম্বর
|
মে থেকে আগষ্ট
|
মার্চ থেকে আগষ্ট
|
নাকের পানি?
|
খুবই বেশী
|
থাকে কিূন্তু কম
|
চোখের পানি সহ খুবই বেশী
|
হাঁচি?
|
বারেবারে
|
না ও হতে পারে
|
হয়
|
মাথা কামড়ি?
|
তেমন থাকে না
|
প্রচন্ড ভাবে থাকে
|
খুবই প্রচন্ড ভাবে থাকে
|
ভাং&গা গলার শব্দ?
|
হয়
|
নাও হতে পারে
|
সবসময়
|
শীতশীত ভাব?
|
তেমন থাকে না
|
খুবই বেশী
|
খুবই বেশী
|
খুস্খুসে গলা?
|
থাকে না
|
থাকে
|
থাকেই
|
বমি ও ক্ষুধামন্দা?
|
থাকে না
|
খুবই হয়
|
জরের সাথে বাড়্তে থাকে
|
শরীর ব্যাথা?
|
তেমন থাকে না
|
প্রচন্ড ভাবে থাকে
|
প্রচন্ড ভাবে থাকে
|
প্রাথমিক কাশি?
|
থাকে না
|
খুসখুসে কাশি হয়
|
বারে বারে হয়
|
কি কি জটিলতা হতে পারে?
|
নিউমোনিয়া,
কানের প্রদাহ/পূঁজ
সাইনাস প্রদাহ
|
পরবর্তিতে প্রচন্ড অবসন্নতা
|
মারাত্বক নিউমোনিয়া কানের প্রদাহ/পূঁজ, সাইনাস প্রদাহ
মারাত্বক অপূষ্ঠি, মারাত্বক ডায়রিয়া
|
নাকের পানির চিকিৎসা কি?
|
সাধারন ঠান্ডি
|
ইন্ফ্লুয়েন্জা
|
হাম জ্বরের (লুতির পুর্বে)
|
চিকিৎসা কি?
(কোন অবস্থায়্
এন্টিহিষ্টামিন
ব্যবহার করা
উচিৎ নয়, কারন তাতে ঝিলিবরস শুষ্ক হয় বিধায় কাশির সাথে বের করা সম্ভব হয়না)
|
*প্যারাসিটামল
*নাসারন্দ্র পরিস্কার
*২বঃ কমবয়েসীকে এবং COPD র রোগী
-কে এন্টিবায়োটিক
*পয্যাপ্ত পানি
*৫দিন পর পূনঃ পরীক্ষা,
*ধুলোবালি মুক্ত বাতাসে থাকা
|
*প্যারাসিটামল
*পুর্ন বিশলাম
*পর্য্যাপ্ত পানি
*বাষ্পে শ্বাস গ্রহন
*লবনসহ গরম জল দিয়ে গরগরি
*৫দিন পর পূনঃ পরীক্ষা
*ধুলোবালি মুক্ত বাতাসে থাকা।
|
*প্যারাসিটামল
*নাসারন্দ্র পরিস্কার
*২বঃ কমবয়েসীকে এন্টিবায়োটিক
*বেশী পুষ্টিখাবার ও পানি
*৫দিন পর পূনঃপরীক্ষা
*পরিষ্কার পরিবেশে ও ধুলোবালি মুক্ত বাতাসে থাকা,
*ভিটামিন এ ২০০,০০০ লাখ ইউনিট
|
এ ছাড়াও কারো কারো বছরের প্রায় সময় হাচিঁ, সর্দি, নাকে পানির অসুবিধা বার বার হয়। কিছুদিন থাকার পর তাদের শ্বাস কষ্ট ও হয় যদি এই নাকের পানির যথাযত চিকিৎসানা হয়। এ ধরনের হাচিঁ, সর্দি ও নাকে পানি সাধারনত যাদের এলার্জির দোষ থাকে তাদের হয়(Perenneal allergic rhinitis)। খোজ নিলে জানা যাবে এই অবস্থা তা’দের পরিবারের অন্য অনেকের আছে এবং এদের পরিবারের কারো কারো হাপানির মতো অসুবিধা ও আছে\ অবশ্যই মনে রাখতে হবে এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা সম্পুর্ন ভীন্ন যা পরবর্তীতে আলাচনা করা হইয়াছে।
*নাসারন্দ্র বা নাক-পথ পরিষ্কার:-
প্রয়োজন কেন? :-
শ্রাসতন্ত্রে জীবানু প্রবেশ করার প্রধান পথ (gateway) নাসারন্দ্র। নাক দিয়ে পানি ঝরার সময় এই জীবানু প্রবেশ (বাহিত হওয়ার মাধ্যম থাকার কারনে) সহজতর হয় বিধায় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই নিউমোনিয়ার পুর্বে নাকে পানি ঝরার ইতিহাস থাকেই (নিউমোকক্কাল লোবার নিউমোনিয়া ছাড়া)। কারন নাকের পানি বাইরের জীবানু মিশ্রিত কাপড়, আংগুল এবং অন্য কিছুর সংষ্পর্শে আসলে সহসা জীবানুদ্বারা সংক্রমিত হতে পারে, তা নিম্নগামী হয়ে ফুসফুসের অভ্যন্তরে চলে যেতে পারে, আবার নাক-পথ পরিষ্কার না থাক্লে নাক-কানের বায়ুচলাচলের সংযোগ রক্ষাকারী টিউবের (estachian tube) ভেতর নাকের নিঃস্বরিত পানি ঢুকে কানে প্রবেশ করে কানের জটিল রোগ করতে পারে। আবার নাকের পানির কারনে নাকের ভেতর দিয়ে বাতাসচলাচল বাধাগ্রষ্থ হয় বলে শিশু দুধ চুষে খাওয়ার সময় বার বার দুধ ছেড়ে দিয়ে কান্না করবে, দুধ চোষার সময় এবং ঢোক গেলার সময় উঠবে। সুতরাং এই কারনেই নাক-পথ যুগপৎ জীবানু মুক্ত রাখা, নাকের পানিতে জীবানু জম্মানো প্রতিরোধকরা এবং বাতাস চলাচলে বাধাহীন রাখা প্রয়োজন। এই প্রয়োজনেই নাসারন্দ্র পরিষ্কার (Nasal Toileting) করা প্রয়োজন।
কিভাবে নাসারন্দ্র পরিষ্কার? :-
ডি-কনে্জস্টেন্ট জাতিয় নাকের ড্রপ নাকের বাতাস চলাচল পথ বাধাহীন রাখে ঠিক তবে তা নাকের পানিকে জীবানু মুক্ত রাখতে সাহায্য করে না, আবার
এসব ডি-কনে্জস্টেন্ট নাকের-ড্রপ ব্যবহারে জটিল অবস্থার ও সৃষ্টি হতে পারে।
তাই লবন মেশানো (নাকে) ব্যবহারোপযোগী পানি ব্যবহার
যুগপৎ নাকের বাতাস চলাচলের পথ বাধাহীন রাখে এবং
নাকের পানিকে জীবানু মক্ত রাখে।
তাই, নাকে পানি ঝরা শুরু হলেই
$ সামান্য লবন মিশিলত ফুটানো পরিষ্কার পানি
L ( কি ভাবে এই নাকে ব্যবহারোপযোগী লবন জল তৈরী করা যায়? ১গ্লাস স্বচ্চ জলে ১চা চামুচ লবন মিশিয়ে সেদ্ধ করে ফুটিয়ে পরিস্কার কাপরে ছেকে নিয়ে একটা ড্রপারে বা পরিষ্কার বোতলে নিয়ে রেখে দিতে হবে) বা
$ নর্ম্যাল স্যালাইন (বাজারের নর্ম্যাল স্যালাইন (নর্সল) ড্রপ অথবা ০.৯% নর্ম্যাল স্যালাইন এর ব্যগ থেকে নিয়ে) ২ফোটা করে নাকে ৩/৪ বার দৈনিক দিয়ে বা কটন বাডে লাগিয়ে নাসারন্দ্রের ভেতর পরিস্কার করতে হবে এবং তাতেই নাকের বাতাস চলাচল পথ বাধাহীন থাকবে এবং শ্বাসযন্ত্রের ভেতর জীবানু সংক্রমন রোধ হবে । এতেই নাকের পানির শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুকি ৫০% শতাং কমে পায়।
কোন্ কোন্ এন্টিবায়োটিক::
শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমনে যে সকল জীবানু বেশী থাকে এ গুলোর মধ্যে যেগুলো বেশী
01. স্ট্যাফাইলো কক্কাস অরিয়াস,
02. হেমোফাইলাস ইনপ্লুয়েন্জা,
03. স্ট্রেফটোকক্কাস
04. নিউমোকক্কাস।
এন্টিবায়োটিক বিরোধী স্ট্যাফাইলো কক্কাস জীবানু এই সকল তন্ত্রে সংক্রমন বেশী করে বিধায় এ ক্ষেত্রে নিচের এন্টিবায়োটিক গুলোর একটা প্রয়োগ করা যাইতে পারে।
01. ক্লেভুল্যানিক মিশ্রিত এমোক্সিসিলিন,
02. ইরিত্রোমাইসিন, এজিত্রোমাইসিন,
03. থার্ড জেনারেশান এর সেফালোস্ফোরিন (সেফুরোক্সিম, সেফিক্সিম)
04. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে লিভোফ্লক্সাসিন (১৪-৬০বৎ বয়েসি গর্ভবতী আর দুগ্ধবতী ছাড়া).
সর্দি কাশি আছে এরুপ শিশুর চিকিৎসা:: কিভাবে এগুতে হবে?
কি কি জিজ্ঞেস করতে হবে?
শিশুর ১. বয়স কতো?
২. কতদিন যাবৎ কাশি?
৩. পানীয় গ্রহনে কোন অসুবিধা হচেছ কি? -বমি হচেছ? -কাশি উঠ্ছে?
৪. জ্বর আছে কি? -কতদিন যাবৎ?
৫. খিচুনি হয়েছিল কি?
কি কি দেখতে হবে?
শিশুর ১. নাকের অগ্রভাগ দেখুন -শ্বাসের সাথে ফুলে কি?
২. বুকটা দেখুন; -শ্বাসের সাথে ভেতরে চেপে যায়কি?
৩. শ্বাসের গতি দেখুন; -প্রতি মিনিটে কতবার?
৪. শরীরের তাপ দেখুন; -অস্বাভাবিক বেশী নাকি কম?
কি কি খেয়াল করতে হবে?
শিশুর ১. শ^াসের শব্দ --কোন ফোঁস ফোঁস শব্দ হচ্ছে কি?
২. আপাত অবস্থা --অস্বাভাবিক নিদ্রালুতা? --ঘুম হতে জাগে না?
৩. শরীরের পুষ্ঠিগত অবস্থা; -মারাত্বক পুষ্টিহীনতার কোন লক্ষন আছে কি?
কম বয়েসী শিশুর সর্দি-কাশি! কি ভাবে ব্যাবস্থাপনা করতে হবে?
অবস্থার গুরুত্ব এবং চিকিৎসাপ্রয়োগের ভীন্নতার বিচারে সর্দি-কাশী রোগীদের ৩শ্রেনীতে বিবেচনা করা যেতে পারেভ
০১. সর্দি-কাশীর শিশু:: সাধারন ঠান্ডা, নিউমোনিয়া নয়?
০২. সর্দি-কাশীর শিশু:: নিউমোনিয়া
০৩. সর্দি-কাশীর শিশু:: মারাত্বক নিউমোনিয়া
০১. সর্দি-কাশীর শিশু:: সাধারন ঠান্ডা, নিউমোনিয়া নয়?
$ দেখতে হবে::
যদি দেখা যায় . . . . এ শিশুটির:
* নাকে সদি (ঘন নাকি পানির মতো)র্ ও কাশি আছে ঠিকই,
* তবে সাথে শ্বাস নেয়ার সময় বুক ভেতরের দিকে চাপে না ও
* কান্না করছে (শরীর কামড়ি ও গা ম্যজম্যজ থাকার কারনে) এবং মুখে মায়ের বুকের দুধ দিলে শান্ত থাকছে এবং দুধ চুষতে পারছে।
* শ্বাসের গতি ও দ্রুত নয়
(১বছরের শিশুর মিনিটে ৬০ এর বেশী, ১-৫বছরের শিশুর মিনিটে ৪০ এর বেশী)
$ তবে বুঝতে হবে . . . . এ শিশুটির:
* নিউমোনিয়া নয়, সাধারন সর্দি অথবা কাশি (ঠান্ডি জ্বর), এবং
$ এ রোগীকে চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা দিতে হবে . . . .
১. মাকে পরামর্শ দিতে হবে
* বাচ্চাকে উষ্ঞ রাখুন ,
* ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান
* নাক পরিষ্কার রাখুন এবং আলোবাতাসের ঘরে পরিস্কার কাপড়, চাদরে রাখুন
* ঠান্ডা লাগার ভয়ে অতিরিক্ত কাপড়ে জড়িয়ে রাখা ঠিক নয়,
* ইষদোষ্ঞ তাজা ফলের রস বা গরম জল ৮/১০ চামুচ করে দিনে ৪/৫বার।
* যেহেতু শিশু শরীর কামড়ি ও গা ম্যজম্যজ থাকবে, তাই খেতে চাইবে না বিধায় জ্বর থাকুক বা না থাকুক মুখে প্যারাসিটামল ২০মিগ্রা/কেজী দিনে ৩ বার করে ৫/৬দিন দেয়া উচিৎ।
০২. এবং বলতে হবে পূনঃ নিয়ে আস্তে বা হাসপাতালে যেতে,
যদি নিচের কোন অসুবিধা হলেই
F শ্রাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে মনে হলে
F খাওয়ানোর সমস্যা দেখা দিলে
F শ্বাসপ্রশ্ব^াসের গতি দ্রুতে মনে হলে
F শিশুকে বেশী কাতর বা অসুস্থ মনে হলে
০৩. নাকের পানি ঘন মনে হলে একটি এন্টিবায়োটিক খাওয়ানোর পরামর্শ দিন
R ক্ল্যাভুলিনিক এসিড মিশ্রিত এমোক্সিসিলিন,
R সেফ্রাডিন, R সেফুরোক্সিম,
R কোট্রাইমোক্সাজল, R ইরিত্রোমাইসিন।
০২. সর্দি-কাশীর শিশু:: নিউমোনিয়া
$ দেখতে হবে::
যদি দেখা যায় . . . . শিশুটির
* কাশি আছে এবং কান্না করতে গেলেই কাশী উঠছে, সাথে
* শ্বাস নেওয়ার সময় বুক মারাত্বকভাবে ভেতরের দিকে চেপে যায় বা
* দ্রুত শ্বাসের গতি (মিনিটে ৫০ বার এর বেশী)।
$ তবে বুঝতে হবে . . . .
এ শিশুটির: * নিউমোনিয়া অবস্থা হয়েছে।
$ এবং এই শিশু রোগীটিকে চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা দিতে হবে. . . .
যেহেতু * রোগীকে অক্সিজেন দিতে হতে পারে এবং
* খাবার ও ঔষূধ মুখে সরাসরি না খাওয়ায়ে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়াতে হতে পারে এবং
* নেবুলাইজার দিয়ে শ্বাসনালী প্রসারক ঔষূধ দিতে হয়
সেহেতু ১. জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার প্রয়োজনে পাঠিয়ে দিতে হবে রেফার করে।
২. এন্টিবায়োটিক ১ম ডোজ ইনে্জকশানের মাধ্যমে দিয়ে দিতে হবে এবং রেফারপপত্রে উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে ৩য়প্রজম্মের সেফালোস্ফোরিন যেমন সেফি্ট্রএক্সন, সেফুরোক্সিম দেয়ার যোক্তিকতা আছে।
৩. শিশুটিকে অর্থাৎ রোগীকে উষ্ঞতায় রাখার পরামর্শ দিন।
** এ অবস্থায় কেন অক্সিজেন দিতে হয়?
শরীরের ফুসফুস বেলুনে জীবানু সংক্রমিত নিঃসরন জমে যাওয়ার কারনে
01. নিশ্বাস নেয়ার সময় ফুসফুস স্বাভাবিক ভাবে প্রসারিত হতে পারে না
02. নিশ্বাসের বাতাস হতে প্রয়োনীয় পরিমান অক্সিজেন ফুসফুসে শোষক জালিকার সংষ্পর্শে আসতে পারে না, যে কারনে শরীরে অক্সিজেন কমতি হয়,
03. এই অক্সিজেন কমতি দীর্ঘক্ষন থাকলে অক্সিজেন ঘাটতিতে রেচনের ফলে রক্তে অম্লyুধক্য সুষ্টি হয়, ফলে রোগীর অবস্থা জটিল হয়ে যায়,
বিধায় এ অবস্থায় কেন অক্সিজেন দিতে হয়
** এ অবস্থায় কেন মুখে খাওয়ানো বিপদজনক
বেশী অক্সিজেন পাওয়ার জন্য শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়ে যায়, এ অবস্থায় মুখে খাওয়াতে গেলে তা ফুসফুসে প্রবেশ করে যেতে পারে এবং রোগীর এসপিরেশান নিউমোনিয়া হয়ে জটিল হতে পারে।
নেবুলাইজার দিয়ে কেন শ্বাসনালী প্রসারক ঔষূধ দিতে হয়?
শ্বাসনালী এবং যন্ত্রের ভেতরে প্রদাহ এবং নিঃসরনের কারনে শ্বাসপথ সরু হয়ে যায় এবং বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্থ হয় এবং রোগীর শরীরের অক্সিজেন কমতি বেড়ে যায় বিধায় নেবুলাইজার দিয়ে কেন শ্বাসনালী প্রসারক ঔষূধ দিতে হয়।
০৩. সর্দি-কাশীর শিশু:: মারাত্বক নিউমোনিয়া
দেখতে হবে::
যদি দেখা যায় . . . . শিশুটির
* কাশি, দ্রুত শ্বাসের গতি , শ্বাসে বুক চেপে যাওয়া আছে, সাথে
* ভাল ভাবে খেতে বা দুধ পান পারে না,
* দুধ পান বা আহারের সময় কাশি উঠে বার বার বমি হয়,
* খিচুনি হয়েছে বা অস্বাভাবিক ঘুমঘুম ভাব বা সহজে ঘুম ভাঙানো যায় না
* শান্ত অবস্থায়ইও বক্ষপিঞ্জরের ভেতর শব্দ হচ্চে,শ্বাস কষ্ট ওফোঁস ফোঁস শব্দ
* বেশী জ্বর বা অস্ব^াভাবিক কম তাপমাত্রা-
$ তবে বুঝতে হবে . . . .
* এ শিশুটির: খুবই মারাতল্পক নিউমোনিয়া
এবং এই শিশু রোগীটিকে চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা দিতে হবে. . . .
যেহেতু * রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে এবং
* খাবার ও ঔষূধ মুখে সরাসরি না খাওয়ায়ে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়াতে হবে এবং
* নেবুলাইজার দিয়ে শ্বাসনালী প্রসারক ঔষূধ দিতে হবে,
সেহেতু ১. জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার প্রয়োজনে পাঠিয়ে দিতে হবে রেফার করে।
২. এন্টিবায়োটিক ১ম ডোজ ইনে্জকশানের মাধ্যমে দিয়ে দিতে হবে এবং রেফারপপত্রে উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে ৩য়প্রজম্মের সেফালোস্ফোরিন যেমন সেফি্ট্রএক্সন, সেফুরোক্সিম দেয়ার যোক্তিকতা আছে।
৩. শিশুটিকে অর্থাৎ রোগীকে উষ্ঞতায় রাখার পরামর্শ দিন।
মুখে না খাওয়ানোর যৌাক্তকতা, অক্সিজেন দেয়ার প্রয়োজনিয়তা এবং নেবুলাইজার দিয়ে শ্বাসনালী প্রসারক দেয়ার কারন পুর্বেই আলাপ করা হয়েছে।
নিউমোনিয়ার রোগী মারা যাওয়ার কারন গুলো বিশ্লেষেন করে দেখা গেছে
প্রধান কারন এস্পিরেশান, অক্সিজেন কমতি হেতু রক্তে অম্লাধিক্য এবং সেপটিসেমিয়া যেগুলো প্রতিরোধ করা যায় নিম্নোক্ত পদক্ষেপের মাধমে
01. মুখে সরাসরি খাবার খাওয়ানো সাময়িক বন্ধ রেখে (এস্পিরেশান প্রতিরোধ),
02. সময়মতো অক্সিজেন প্রয়োগ করে (রক্তে অম্লাধিক্য প্রতিরোধ) এবং এবং নেবুলা্জারের মাধ্যমে শ্বাসনালী প্রসারক প্রয়োগ করে (অক্সিজেন চলাচল বৃদ্ধি করা)
03. যথাযত কার্যকর এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ (সেপটিসেমিয়া প্রতিরোধ)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন